রুশ বাহিনী ইউক্রেন আক্রমণের ছয় মাস পার হয়েছে। এখনো মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় কাঁপছে অগণিত পরিবার, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, এমনকি বিভিন্ন সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়। রাশিয়া থেকে সরবরাহ আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কায় ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়েছে গত ২২ আগস্টেও। কিন্তু এর মধ্যেই মাটিতে পা রেখেছে বৈশ্বিক খাদ্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দাম। তেল, শস্যসহ বেশিরভাগ খাদ্যপণ্যের দাম ফিরে এসেছে যুদ্ধের আগের অবস্থায়।
বৈশ্বিক কৃষি খাতের অন্যতম পাওয়ারহাউজ বলা হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনকে। বিশ্বের এক ও পাঁচ নম্বর বৃহত্তম গম রপ্তানিকারক তারা। সূর্যমুখী তেলেরও অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী দেশ দুটি। যুদ্ধের কারণে তাদের রপ্তানি ব্যাহত হবে, এমন আশঙ্কায় গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া আশ্চর্যজনক নয়। পারতপক্ষে উদ্বেগের বিষয় ছিল যে, ঘাটতি অব্যাহত থাকবে, শস্যের মজুত কমে যাবে এবং ব্যাপক অনাহারের পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।
তবে সেই ভয়াবহ পরিণতি এড়ানো গেছে বলে মনে হচ্ছে। গত সপ্তাহে শিকাগোয় গমের দাম (ডিসেম্বরে ডেলিভারির জন্য) প্রতি বুশেল (প্রায় ২৭ কেজি) ৭ দশমিক ৭০ মার্কিন ডলারে নেমেছে, যা তিন মাস আগে ওঠা ১২ দশমিক ৭৯ ডলারের চেয়ে অনেক কম এবং গত ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর আগের পর্যায়ে প্রায়।
গমের মতো ভুট্টার দামও এখন যুদ্ধপূর্ব পর্যায়ে। আর পাম তেলের দাম কেবল যুদ্ধের আগের পর্যায়েই ফেরেনি, বরং তারও নিচে নেমে গেছে।
ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানিতে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় সাম্প্রতিক চুক্তি এই পরিবর্তনের মাত্র একটি ভগ্নাংশ ব্যাখ্যা করতে পারে। কারণ গত জুলাইয়ের শেষের দিকে চুক্তিটি সই হওয়ার আগেই বেশিরভাগ দাম কমে গিয়েছিল। এর জন্য বরং রাশিয়ার গম রপ্তানি সক্ষমতাকেই বেশি কৃতিত্ব দেওয়া যেতে পারে।