ঢাকা: ঈদযাত্রায় মহাসড়কে বেপরোয়া গাড়ি চালালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ঘরে ফেরা মানুষের ঈদযাত্রা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
আইজিপি বলেন, মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। পাশাপাশি জেলা পুলিশসহ অন্যান্য পুলিশের ইউনিট কাজ করছে। বেপরোয়া গাড়ি চালালে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবেন তারাও ব্যবস্থা নেবেন। ফিটনেস বিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিবছর আমরা ঈদের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। রমজানের সময় মাসজুড়ে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে। একটা সময় এসে আমরা মার্কেটগুলোতে একটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করি।
এখন মার্কেটগুলোর পাশাপাশি আমাদের যেসব নাগরিকরা আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে যাবেন তাদের নিরাপত্তা, ট্রাফিক ব্যবস্থাসহ পর্যটনস্থানগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা বিবেচনা করে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রনয়ণ করেছি। পুলিশের সকল ইউনিট দায়িত্ব পালনে এ সময় নিয়োজিত থাকবে। আমাদের স্পেশাল টিমসহ পুলিশের সকল ইউনিট এই ঈদের সময় মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়োজিত থাকব।
তিনি আরো বলেন, আপনার দেখেছেন ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় সাব কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাব কন্ট্রোল রুম করে আমরা নিরাপত্তা জোরদার করেছি। যাত্রী সাধারণ যেন দ্রুত সময়ে নিরাপদে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারেন সেজন্য আমরা সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
অন্যান্য বছর সারা দিন যাত্রী সাধারণদের রাস্তায় বসে থাকতে হয়েছে। সরকারের উদ্যোগে পদ্মা সেতু চালু হয়েছে। আমরা জানি উত্তরবঙ্গের রাস্তারও অনেক উন্নতি হয়েছে। আগে চন্দ্রার মোড়ে ৮-১০-২০ ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। কিন্তু রাস্তার উন্নয়ন হওয়ায় যাতায়াত এখন অনেক সহজ হয়েছে।
আমরা পরিবহন কাউন্টারগুলোতে কথা বলেছি, এখনো তেমন যাত্রী চাপ পড়েনি। সেহরির পর যাত্রীর চাপ বাড়বে। যাত্রীরা যেন নিরাপদে ভ্রমণ করে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারেন সেই জন্য গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এক সঙ্গে কাজ করছে। ঈদের জামাতের মাঠের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি।
এ সময় যাত্রীদের অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, আপনারা ভ্রমণকালে অপরিচিত কোনো মানুষের দেওয়া কিছু খাবেন না। এগুলো খেলেই অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা আশা করছি সাধারণ মানুষ কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়া ঈদ যাত্রা করতে পারবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ঢাকা ফাঁকা হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন হবে, সেটার জন্য আমাদের ওই সময়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। রাতের বেলা ও দিনের বেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ঢাকা ছাড়াও বড় বড় শহরেও আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
আমরা দেখেছি ফাঁকা ঢাকায় অনেকে বাসা বাড়ি পরিবর্তন ও ফার্নিচার পরিবর্তন করেন। এমন পরিবর্তন কেউ করতে গেলে নিরাপত্তা প্রহরীরা যেন তাদের প্রশ্ন করেন। পুলিশসহ আমরা সবাই সচেতন থাকলে ফাঁকা ঢাকাকে আমরা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দিতে পারব।
সম্প্রতি মার্কেটে আগুন লাগার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। প্রতিটি ঘটনা আমরা তদন্ত করছি। এর মধ্যে নাশকতার কোনো বিষয় আছে কি না, থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। ঢাকা ও ঢাকার বাহিরের মার্কেটগুলোর কমিটির সঙ্গে পুলিশ আলোচনা করেছে। তাদের বিভিন্নমুখী নিরাপত্তা ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।