ঢাকা, বুধবার ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩শে মাঘ ১৪৩১

রৌমারী ও চর রাজিবপুরের ২৫গ্রামের মানুষ পানিবন্ধি

শৌখিন মিয়া, রৌমারী ও চর রাজিবপুর : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:৩৭:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর
উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় পাহাড়ী ঢলে কুড়িগ্রামের রৌমারী ও চর রাজিবপুরে ২টি উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ৫৬টি মৌজার ৩০০টি গ্রামের মধ্যে ২৫টি গ্রামের ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। 
 
 অপরদিকে কৃষকের বীজতলা, শাকসবজি ও রোপাআমন ধানসহ নানান প্রকার ফসল তলিয়ে গেছে। চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যর তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
 
 সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানিবন্ধি হয়েছে রৌমারী উপজেলার ফলুয়ারচর, পালেরচর, গোয়ালেরচর, ঠাকুরেরচর, বাইশপাড়া, কান্দাপাড়া, সুখেরবাতি, খেরুয়ারচর, পাখিউড়া, ধনারচর চরের গ্রাম,গুচ্ছগ্রাম ও রাজিবপুর উপজেলার চরসাজাই, ডাটিয়ারচর, কোদালকাটি, শংকর মাধবপুর, কোদালকাটি, বড়চর, নাওশালা, জালছিড়া, সাজাই মন্ডলপাড়াসহ ২৫টি গ্রাম। বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদী উপচে গিয়ে ওইসব এলাকা প্লাবিত হয়। এতে পানিবন্ধি হয়ে পড়ে ২৫টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার পরিবার। 
 
ইতোমধ্যে ওইসব এলাকার রাস্তা তলিয়ে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে মানুষ জীবনের ঝুকি নিয়ে নৌকা বা ভেলা দিয়ে পারাপার হচ্ছে। অনেক বাড়ির উঠানে পানি উঠায় রান্না করতে পারছেনা তারা। স্ত্রী সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন পরিবারগুলো। 
 
কোদালকাটি গ্রামের শাহিদুল ইসলাম বলেন, নদীর পানির স্রোতে আমার বসতবাড়ি ভেঙ্গে গেছে। অন্যের একটু জায়গায় ছাপড়া তোলে বসবাস করছি। আমরা কোন ত্রাণ পাইনি।
 
চরসাজাই গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়িতে পানি উঠেছে। শিশুদের নিয়ে চরম বিপাকে আছি।
 
চর রাজিবপুর উপজেলার নির্বহী অফিসার তানভির আহমেদ বলেন, নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নীচে রয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত মানুষের জানমালের উপর তেমন কনো প্রভাব পড়েনি। তবে নদ-নদীতে পানি এখনো বৃদ্ধি পাচ্ছে।  
 
রৌমারী উপজেলার ফলুয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সবুর বলেন, বন্যার পানি বৃদ্ধি হওয়ায় আম্রা স্কুল মাঠে পানি উঠেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসা যাওয়া করছে।
 
বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল কাদের সরকার বলেন, বন্যার পানিতে আমার ইউনিয়নের পশ্চিম দিকে বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি উঠেছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বেঁরিবাধ ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়বে। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) পিআইও) অধিদপ্তর থেকে কয়েকটি পরিবারকে কিছু শুকনা খাবার দেয়া হয়েছে। 
   
রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় আক্রান্ত রোপাআমন ধান ৭৮০ হেক্টর, শাকসবজি ৪৬ হেক্টর ও বীজতলা ৮ হেক্টর তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি হতে থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পাড়ে। 
 
রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেশকাতুর রহমান বলেন, ঝুকি পূর্ণ এলাকায় চাউল ও শুকনা খাবার বিতারণ দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এরকম থাকলে শুকনা খাবার বিতরণ চলমান থাকবে। 
 
রৌমারী উপজেলার নির্বহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত এলাকায় চাল ও শুকনা খাবার পৌঁছানো হয়েছে।