ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতকাণ্ডে ১৫ মামলায় কারান্তরীন থাকা ইউপি চেয়ারম্যান শপথ নিতে পেলেন প্যারোলে মুক্তি। কারাগারে থেকেই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে পরাজিত করে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ইসলামী ঐক্যজোট নেতা মনিরুল ইসলাম। অবশেষে মাত্র তিন ঘন্টার জন্য প্যারোলে মুক্ত হয়ে শপথ গ্রহণের পর পুনরায় গেলেন জেলা কারাগারে।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সদর উপজেলার তালশহর পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন মনিরুল ইসলাম। জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম তাকে শপথবাক্য পাঠ করান। একই দিনে জেলার সদর উপজেলার ১০ টি এবং বিজয়নগর উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শপথ গ্রহণ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার তালশহর পূর্ব ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ইসলামী ঐক্যজোট নেতা মনিরুল ইসলাম। তিনি সদর উপজেলা ইসলামী ঐক্যাজোটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
জেলা কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধীতা করে গত বছরের ২৬-২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ত্রিশটিরও বেশি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের চালানো তাণ্ডবের ঘটনায় রজুকৃত পৃথক ১৫ টি মামলায় আসামি হন মনিরুল ইসলাম। এসব মামলায় গত বছরের ২২ জুন থেকে কারাগারে আছেন মনিরুল ইসলাম। কারান্তরীন থেকেই ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হন মনিরুল। তার পক্ষে পরিবারের সদস্যরা এবং দলীয় নেতাকর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণা চালান। এরই ফলশ্রুতিতে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থীকে পরাজিত করে তিন হাজার ৯৬১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মনিরুল। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও কারান্তরীনই থাকেন। তার বিরুদ্ধে রজুকৃত ১৫ মামলার মধ্যে ইতোমধ্যে ১৪টি মামলায় জামিন লাভ করেন। অপর একটি মামলায় এখনও জামিন না হওয়ায় কারান্তরীন আছেন, কারামুক্ত হতে পারেননি। অবশেষে চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নিতে আদালতের নির্দেশে মাত্র তিন ঘন্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পান মনিরুল ইসলাম। শপথ গ্রহণের পর পুনরায় তাকে পাঠানো হয় জেলহাজতে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের জেলার দিদারুল আলম বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, 'আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সময়ের জন্য প্যারোলে মুক্তি পান মনিরুল ইসলাম। শপথ গ্রহণ শেষে আবার তাকে পাঠানো হয় কারাগারে।