বাষট্টি, ঊনসত্তর এবং সত্তর শেষ করে একাত্তরে বাঙালি জাতি হিসাব করতে বসে। হিসেব-নিকেশ আর দেনা-পাওনায় পাকিস্তানিরাও বসে ছিলোনা। তারাও অংক কষতে থাকে কীভাবে বাঙালি জাতিকে যুগ যুগ ধরে পরাধীনতার শেকল পরিয়ে রাখা যায়। তাদের কাছে এই অলংকারই বাঙালির শ্রেষ্ঠ প্রাপ্য। ঘড়ির কাঁটার টিক টিক শব্দ জানিয়ে যায় সময় আসছে হিসেব-নিকেশ চুকিয়ে দেওয়ার পালা।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙে স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। ২৪ বছরের নাগপাশ ছিন্ন করে জাতির ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় এক নতুন সূর্যোদয়। প্রভাত সূর্যের রক্তাভ ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। সমস্বরে একটি ধ্বনি যেন নতুন বার্তা ছড়িয়ে দেয়, জয় বাংলা বাংলার জয়। মহামুক্তির আনন্দ ঘোর এই দিনে এক নতুন উল্লাস জাতিকে প্রাণ সঞ্চার করে সজীবতা এনে দেয়। যুগ যুগ ধরে শোষিত বঞ্চিত বাঙালি চোখে আনন্দ অশ্রু আর ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় সামনে। বিন্দু বিন্দু স্বপ্নের শেষে মিলিত হয় জীবনের মোহনায়। অবশেষে ৯ মাসের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে বাঙালি জাতির জীবনে এলো নতুন প্রভাত। ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সূচিত হয় মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য বিজয়। এর মধ্য দিয়ে এলো হাজার বছরের কাঙ্খিত স্বাধীনতা। বাঙালি জাতি এদিন অর্জন করে তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২ লাখ ধর্ষিতা মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা ধরা দেয় বাঙালির জীবনে।
১৮ ডিসেম্বর ২০২২ রবিবার বেলা ১২ টায় সমিতির সভাকক্ষে সিলেট ডায়াবেটিক সমিতি আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য প্রদানকালে কথা গুলো বলেন সমিতি ও সভার সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম. এ. আহবাব।
সিলেট ডায়াবেটিক এন্ড জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ললিত মোহন নাথ এর সঞ্চলনায় সভায় ১৪ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সনে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণ করে বিজয়ের তাৎপর্য বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন ও বক্তব্য রাখেন সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা: আজিজুর রহমান, ডা. আলতাফুর রহমান, সাধারন সম্পাদক লোকমান আহমদ ও হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডা: আলাউদ্দিন আহমেদ প্রমূখ। এ সময়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমিতির কোষাধ্যক্ষ এম. এ. মান্নান, যোগ্ম-কোষাধ্যক্ষ শিবব্রত ভৌমিক চন্দন, সদস্য বশিরুল হক সহ সমিতির জীবন সদস্যগন ও হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।