ঢাকা, রবিবার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২রা অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শাল্লায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:৫৬:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন



সুনামগঞ্জের শাল্লায় উজান যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিত বরন তালুকদারের বিরুদ্ধে স্কুলে অনিয়মিত আসা ও স্কুলের উন্নয়নমূলক কাজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

বিগত ১০ নভেম্বর উজান যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র প্রধান শিক্ষকের স্কুলে নিয়মিত না আসা নিয়ে কথোপকথনের একটা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরই প্রেক্ষিতে ১৫ নভেম্বর তদন্তে আসেন শাল্লা উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাপস কুমার রায় ও সহঃ শিক্ষা অফিসার মো. আবু রায়হান। তদন্তে ম্যানেজিং কমিটি ও গ্রামবাসীর বক্তব্য নেন। তদন্ত কমিটি তাদের বক্তব্য অনুসারে ভিডিও ভাইরালের সত্যতা পেয়েছেন এবং স্কুলের উন্নয়ন ও হিসাবের কোন তথ্য পায় নি বলে মনে করেন ম্যানেজিং কমিটি ও গ্রামবাসী। পরে স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের লিখিত বক্তব্যও নেন তদন্ত কমিটি।

এই আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে একজন সংবাদকর্মী স্কুলের প্রধান শিক্ষক অজিত বরন তালুকদারের কাছে উজান যাত্রাপুর স্কুলের উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের হিসাব চাইলে, তিনি হিসাব দিতে অস্বীকৃতি জানান বরং বিভিন্ন ধরনের কথা বলেন।

স্কুলের দাতা সদস্য উপানন্দ তালুকদার বলেন, এই প্রধান শিক্ষক আসার আগে স্কুল খুব ভাল চলছিল। কিন্তু এখন সে আসার পর স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ অনেক খারাপ। ঠিকমতো ক্লাস না করেই চলে যায়। তার এখতিয়ার মতো কাজ করে।

তদন্তের কথা বললে তিনি বলেন, তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি। তদন্তে যাই কিছু হোক না কেন, আমাদের স্কুল ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিক্ষার্থীদের ভালোর জন্য সবকিছু করবেন বলে জানান তিনি।

এব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুমন সরকার বলেন, আমাকে প্রধান শিক্ষক বলছিলেন স্কুলের বিভিন্ন কাজ করাতে হবে।

কাজ করছেন কিনা বললে তিনি প্রতিবেদকে জানান, আমি কাজ দেখি নাই। টাকা উত্তোলনের বিষয়ে বললে সভাপতি বলেন, টাকা উত্তোলন করে ব্যয়ও করা হয়েছে।

স্কুল কমিটির সহ-সভাপতি অতুল দাশ বলেন, মাষ্টর আইলেও ৪টার আগেই স্কুল থাইক্যা আইওয়। কাজ টাজ বিষয়ে তেমন একটা জানিনা।

স্কুল কমিটির সদস্য জনপ্রতিনিধি মধু দাস বলেন, “আমি যে কমিটিতে আছি নিজেই জানি না। কাজের হিসাবতো দূরের কথা মাষ্টার আমারে কোন দিন সদস্য বানাইছে কইতামই পারিনা।”

এব্যাপারে মহিলা বিদ্যুৎসাহী শেলী রাণী দাস বলেন, আমি স্কুলের কাজ ও হিসাবের বিষয়ে কিছু জানিনা।

এব্যাপারে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. আবু রায়হান বলেন, হিসাবের তথ্য না দেওয়া প্রধান শিক্ষককের অজ্ঞতা।

তদন্তের কথা বললে, তিনি বলেন আমরা তদন্ত করেছি এ সপ্তাহেই তদন্তের প্রতিবেদন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে দিব।

এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাপস কুমার রায় বলেন, যে কোন সংবাদকর্মী তথ্য চাইলে অবশ্যই তথ্য দিতে হবে। তার এ বিষয়ে জানা উচিত। উনি কেন তথ্য দেয় নি আমি বিষয়টি দেখবো। আর তদন্ত যেহেতু করেছি আমরা তদন্তের রিপোর্ট খুব দ্রুত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে হ্যান্ড ওভার করব।

এব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান বলেন, যেকোন তথ্য সংবাদকর্মীদের দিতে হবে। তথ্য না দেওয়াটা তার অনুচিত।

তদন্তের বিষয়ে আরও বলেন, তদন্ত আমিই দিয়েছি। আমি খোঁজ নিচ্ছি তদন্তের প্রতিবেদন আমার কাছে দ্রুত দেওয়ার জন্য।