নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ যোগ দিতে এসেছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতা মাহমুদ হোসেন। কিন্তু সমাবেশ পর্যন্ত আর যাওয়া হয়নি তার।
মিছিলের নেতৃত্ব দিয়ে ফকিরাপুল আসতেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেখানে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মাহমুদ হোসেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। স্ট্রোক করে তিনি মারা যান বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু মাহমুদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঢাকায় পৌঁছে আমরা একসাথে শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে সমাবেশের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় মাহমুদ হার্ট এ্যাটাক করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন আমরা তাকে সাথে সাথে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাই। সেখানকার চিকিৎসক মাহমুদকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আমি তার পরবারকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়ে তাদের ঢাকা মেডিকেলে আসতে বলি।
শোক প্রকাশ করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, মাহমুদুর রহমান প্রায় তিন দশক ধরে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। রাজপথে সকল দলীয় কর্মসুচিতে তার অংশগ্রহণ ছিলো। এই অনাকাঙ্খিত মৃত্যুর ঘটনার আমি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করছি।
মাহমুদুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, মাহমুদুর রহমানের মৃত্যুতে মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে গভীর শোক নেমে এসেছে। মাহমুদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মৃত্যুকালে বিএনপি নেতা মাহমুদুর রহমানের বয়স হয়েছিল প্রায় ৬২ বছর। পরিবার নিয়ে শহরের ডনচেম্বার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তিন ছেলে, ছয় ভাই ও তিন বোনসহ বহু আত্মীয় স্বজন রেখে ছেন তিনি।
তার মৃত্যুর বিষয়ে মাহমুদুর রহমানের ছোট ভাই অপটিক্যাল ব্যবসায়ী মো. মাসুম বলেন, আমার মেয়ে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে তার চাচাকে ফোন করে রেজাল্টের খবর জানায়। এরপর আমিও মাহমুদ ভাইয়ের সাথে ফোনে কথা বলি। তিনি জানালেন ঢাকায় পৌঁছে গেছেন। একটু পর পর মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিবেন। এর মাত্র দশ মিনিট পরেই খবর পাই আমার ভাই মিছিলে মারা গেছেন।
মাহমুদ এর ছোট ভাই মাসুম কান্নাজড়িত কন্ঠে আরও বলেন, দুই বছর আগে ভাবি হার্ট এ্যাটাকে মারা যাওয়ার পর থেকে তিনিও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। স্ত্রীর মৃত্যু শোকে তিনি নিজেও হার্ট এ্যাটাক করেন। এরপর থেকে হৃদরোগে ভুগছিলেন। মাহমুদ ভাই ছিলেন আমাদের পরিবারের অভিভাবক। পারিবারিক যে কোন ব্যাপারে আমরা তার উপর নির্ভরশীল ছিলাম এবং তার পরামর্শমতো কাজ করতাম। ভাইকে হারিয়ে আমাদের পুরো পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। আমরা এই মৃত্যু শোক কোনভাবেই সহ্য করতে পারছি না।