ঢাকা, রবিবার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২রা অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কমলগঞ্জ মুক্ত দিবস ৫ ডিসেম্বর

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : রবিবার ৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:৩০:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

 



মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মুক্ত দিবস ৫ ডিসেম্বর সোমবার। স্বাধীনতার উষালগ্নে ১৯৭১ সালের এই দিনে সীমান্তবর্তী উপজেলায় হানাদারমুক্ত হয়েছিলো।

 

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মিত্র বাহিনীর সাড়াঁশি অভিযানের মুখে বিপর্যস্ত হয়ে দখলদারিত্ব ছেড়ে পালিয়ে যায় পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী। মুক্তিপাগল বাঙ্গালি উড়িয়ে দেয় স্বাধীনতার পতাকা।

দিবসটি পালন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে  আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল মুনিম তরফদার ও সাবেক ডেপুটি কমান্ডার জয়নাল আাবেদীন জানান, প্রকৃতপক্ষে ৫ ডিসেম্বরই হানাদারমুক্ত হয়। পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সর্ব দলীয় সংগ্রাম পরিষদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর থেকেই এখানে শুরু হয় সশস্ত্র প্রতিরোধের প্রস্তুতি। মুক্তিযুদ্ধের প্রতি অনুগত ৬০ জনের একটি দল তৈরী করে শমশেরনগর বিমান ঘাটিতে ট্রেনিং এর কাজ চলতে থাকে। ১০ মার্চ ক্যাপ্টেন গোলাম রসুলের নেতৃত্বে এক দল পাক সেনা মৌলভীবাজারে অবস্থান নেয়।

তারা আরও জানান, ২৩শে মার্চ পাকিস্তান দিবসে তৎকালিন ছাত্রনেতা নারায়ন পাল ও আব্দুর রহিম পাকিস্তানী পতাকা পুড়ানোর দায়ে গ্রেফতার হন। পরে জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সুচনা লগ্নে নকশাল পন্থিদের নির্মূল করার অজুহাতে মেজর খালেদ মোশারফকে পাঠানো হয়। তিনি ছিলেন বাঙ্গালী সেনা কর্মকর্তা। ২৫শে মার্চ গণহত্যা শুরু হলে তিনি পাক বাহিনীর সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে জনতার কাতারে সামিল হন।

উপজেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ৩টি ঘটনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাত্রখোলা, ধলাই ও ভানুগাছের যুদ্ধ। ন্যাপ নেতা মফিজ আলী, ক্যাপ্টেন মোজাফফর আহমদ, আওয়ামীলীগ নেতা এম, এ, গফুর, ময়না মিয়া, ক্যাপ্টেন সাজ্জাদুর রহমান প্রমুখের সাহসী নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা অসীম সাহসীকতার সাথে লড়েছেন। এখানকার বিভিন্ন রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন বঙ্গবীর এম, এ, জি ওসমানী, বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান, মেজর খালেদ মোশাররফ, ব্রিগেডিয়ার আমিন আহম্মদ ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মত দেশ বরেণ্য ব্যক্তিরা। বিভিন্ন রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছেন বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান, লেন্সনায়েক জিল্লুর রহমান, সিপাহী মিজানুর রহমান, সিপাহী আব্দুর রশিদ, সিপাহী শাহাজাহান মিয়াসহ নাম না জানা অনেকেই।

মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ৩ ডিসেম্বর শমশেরনগর এলাকা শক্রমুক্ত করে ৫ ডিসেম্বরে ভানুগাছ এলাকায় মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে প্রচন্ড যুদ্ধের পর কমলগঞ্জ সদর থেকে পাক হানাদাররা পিছু হটে মৌলভীবাজারের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। মুক্তিযোদ্ধারা এ মাটিতে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে গোটা উপজেলায় হানাদার মুক্ত হয় এ দিনে।