ঢাকা, শুক্রবার ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫শে মাঘ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১২:৫৯:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের খরমপট্টি এলাকায় সাবেক রাষ্ট্রপতির বাসায় হামলা করে ছাত্র-জনতার একটি দল। তারা আবদুল হামিদের বাসায় ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ বলে স্লোগান দেন।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাবেক রাষ্ট্রপতির বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অংশ নিয়েছে ছাত্র-জনতার একটি দল। এ ঘটনায় শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ সময় জেলা শহরের খড়মপট্টি, উকিলপাড়া, গৌরাঙ্গ বাজার ও স্টেশন রোড এলাকাসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ঘণ্টাখানেক বিদ্যুৎ ছিল না। ভাঙচুর করা সাবেক রাষ্ট্রপতির বাড়িসহ হামলা করা অন্য জায়গা থেকে কিছু জিনিসপত্র নিয়ে যেতে দেখা যায় অনেককে।

এর আগে, গতকাল বুধবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত ভবনটিতে অগ্নিসংযোগ করে পাবলিক টয়লেট ঘোষণা করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। পরে রাত ১১টার দিকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়।

এদিন দুপুরে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলা সদর বাজার মোড়ে স্থাপিত সাবেক চার রাষ্ট্রপতির ম্যুরাল ভাঙচুর করে ছাত্র-জনতা। এ সময় সাবেক এমপি আফজাল হোসেনের মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ভাঙচুর ও লুটপাটের ভয়ে দোকান থেকে মালামাল সরিয়ে নেন। দুপুরের দিকে জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদ এলাকায় স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও রেজিস্ট্রি অফিস-সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ভেতরে শেখ মুজিবুরের ম্যুরাল ভাঙচুর করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেছেন, গত জুলাই-আগস্টে হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যার পর তীব্র আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গিয়েও খুনি হাসিনা দেশবিরোধী অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। তাই কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের কোনো অস্তিত্ব রাখা হবে না। খুনি স্বৈরাচার হাসিনার কোনো স্মৃতিচিহ্ন বাংলার মাটিতে দেখতে চায় না দেশের মানুষ।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়িসহ কয়েকটি স্থানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা বিষয়টি আমরা শুনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে, এখনো পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তার বা মামলা হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ প্রায় সব শীর্ষ নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। ওই দিনই সারা দেশে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়, যা ছাত্র-জনতার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ছিল। গতকাল বুধবার ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনার অনলাইন ভাষণের ঘোষণায় উত্তেজিত ছাত্র-জনতা রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়ির সামনে জড়ো হয়। এ সময় ভবনটিতে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এরপর দেশের বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও প্রভাবশালী নেতাকর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়।

বায়ান্ন/পিএইচ