নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার হাইরমারায় অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জেরে বড় দুই ভাই মিলে গাছে বেঁধে পিটিয়ে ছোট ভাইকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে নিহত যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার দিবাগত রাতে উপজেলার হাইরমারা ইউনিয়নের দড়ি হাইরমারা গ্রামে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন রায়পুরা থানার এস. আই. আতিকুর রহমান ভূঁইয়া আতিক।
নিহত যুবকের নাম মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিক (২৬)। সে হাইরমারা ইউনিয়নের দড়ি হাইরমারা গ্রামের মৃত মোরশেদ মিয়ার ছেলে এবং পেশায় একজন শ্রমিক ছিলেন। অভিযুক্ত দুই ভাই হলেন: মোতালেব মিয়া ও মাসুম মিয়া।
নিহতের মা বাবার বাড়ি ছিলেন। সকালে স্থানীয়রা তার নিতরদেহ পরে থাকতে দেখে মা এবং পুলিশকে খবর দেয়। পরে আজ সোমবার সকালে পুলিশ গিয়ে নিহত শফিকুলের মরদেহটি উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠায়।
নিহতের মা আয়েশা বেগম জানান, তার ছেলে সুমন মিয়ার নামে বাড়িতে একটি মিটার রয়েছে। তিনি টঙ্গীতে বসবাস করেন। বর্তমানে তার সংযোগটি আরেক ভাই মাসুম মিয়া ব্যবহার করে আসছিল। পরে একই মিটার থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে চাচ্ছিল শফিকুল। তাতে আপত্তি জানাই বড় দুই ভাই মোতালিব ও মাসুম। এনিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতন্ড হয়। পরে শফিকুল তার ভাই সুমনের পরিচয় দিয়ে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ চরসুবুদ্ধি সাব জোনাল অফিসে সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকেরা রবিবার দুপুুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়। ঐ সময় মোতালিবের একটি অবৈধ সংযোগ দেখতে পান তাঁরা। পরে তারও সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরই জেরে রাতে শফিকুলের সাথে তারা বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়। পরে তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় শফিকুলকে একটি কাঁঠাল গাছের সঙ্গে বেঁধে রবিবার রাতভর উপর্যুপরি পিটিয়ে হত্যা করে।
চরসুবুদ্ধি পল্লী বিদ্যু সমিতির সাব জোনাল অফিসের এজিএম আব্দুল্লাহ ইবনে আজিজ বলেন, এ ব্যাপারে পূর্বে কোন লিখিত অভিযোগ পায়নি। গতকাল নিয়মিত অভিযানে অংশ হিসাবে ওই দুটি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক আতিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে স্থানীয়দের কাছ থেকে জেনেছি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের ঘটনার জেরে শফিকুল নামে এক যুবকে তারই আপন দুই ভাই মোতালিব ও মাসুম মিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। নিহতের শরীরের একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মরদেহটি উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন। জড়িতদেরকে আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত আছে।