ঢাকা, মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২২শে মাঘ ১৪৩১

জবাবদিহিতা নাই বলেই গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে সরকার: রিজভী

রিয়াদ হাসান | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ০৩:২৪:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই সরকারের জবাবদিহিতা থাকলে ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারে ১৯ টাকা বাড়িয়েছে এটা তো হতে পারে না। যারা সীমিত আয়ের মানুষ। নিম্ন আয়ের মানুষ সিএনজি, রিক্সা চালক যারা দিনমজুরি করে খায় তাদের ওপর ভয়ংকর চাপ পড়বে। এই যে প্রতি  সিলিন্ডারে ১৯ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে এটা অযৌক্তিক।এটা গণবিরোধী। নির্বাচিত সরকার থাকলে এ ধরনের পরিস্থিতি হবে না। 

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রয়ারি) দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির নবগঠিত আহবায়ক কমিটি বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ অর্পন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক দল অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে সাপোর্ট দেই। কিন্তু আপনাদের (সরকারকে) মনে রাখতে হবে আপনাদের সিদ্ধান্ত যেন গণবিরোধী না হয় গরিব মানুষ মারার সিদ্ধান্ত যেন না হয়। এমনিতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য প্রতিদিন বাড়ছে। চালের দাম কমাতে পারেননি। তার মধ্যে যদি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয় তাহলে মরার উপর খড়ার ঘা ছাড়া কিছুই নয়।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, শেখ হাসিনা দেশের জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল। সেই ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। এই দেশে কে সরকার গঠন করবে তা নির্ধারণ করবে দেশের জনগণ। কিন্তু শেখ হাসিনা সেটা করতে দেয়নি। ছাত্র জনতার রক্তঝরা গণ আন্দোলনে সেই ভয়ংকর ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য জনগণদের আসা জাগানোর জন্য অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের অনেক কিছু করার আছে। দেশের জনগণ গত ১৬-১৭ বছর ধরে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে নাই। ভোট দিতে পারে নাই। জনগণের চাওয়া অন্তর্র্বতীকালীন সরকার সেই পরিবেশটা তৈরি করবে দেশের জনগণ যাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে ভোট দিতে পারে। 

তিনি বলেন, সংস্কারের নামে জনগণের চোখে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা যাবে না। বিএনপি'র পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে আপনারা সংস্কার করলে করুন কিন্তু সংস্কারের নামে গণতন্ত্রকে মজবুত শক্তিশালী করার জন্য যে কাজগুলো রয়েছে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে জনগণের শক্তি জনগণের ক্ষমতা। সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তার জন্যে নির্বাচনের তারিখ ঠিক করতে হবে। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। কে সংগঠন তৈরি করবে। কে দল তৈরি করবে সেই দায়িত্ব হচ্ছে সেই ব্যক্তির এই দায়িত্ব প্রধান উপদেষ্টার নয়। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা আপনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) করতে হবে তা না হলে জনগণের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি হবে যে শেখ হাসিনার কোন প্রেতাত্মা আবার জন্ম নেয় কিনা একটা সংশয় দেখা দিবে। 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার নাই বলে আজ ইনভেস্টমেন্ট হচ্ছে না। বিনিয়োগ করতে কেউ সাহস পাচ্ছে না। কারণ অন্তর্র্বতীকালীন সরকার হচ্ছে  সাময়িক সময়ের সরকার। সুতরাং মানুষ অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। মানুষ একটা ধোয়াসার মধ্যে আছে। এই অনিশ্চয়তা কাটানোর জন্যই রাজনৈতিক সরকার দরকার। জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দেবে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন যাতে ঘটাতে পারে সেই ধরনের সরকার দরকার। জনগণের জবাবদিহি মূলক সরকার হবে সেটা হবে নির্বাচিত সরকার। তাহলে আমাদের অর্থনীতির যে সংকট। বৈদেশিক ঋণের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। আমাদের জাতীয় রিজার্ভ আবার কমতে শুরু করেছে দিগন্ত রেখায় কালো মেঘ দেখা দিচ্ছে। এগুলো দূরীভূত করতে হলে অবশ্যই আমাদেরকে নির্বাচিত সরকারের পথে হাঁটতে হবে।

এসময় মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খান রিতা, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইদুল আলম বাবুল, সহ অর্থ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, এস এ জিন্নাহ কবিরসহ আরও অনেক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।