নওগাঁয় ইউএনও অফিসের সামনে থেকে দরপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সদর উপজেলার জলমহালগুলো ইজারা প্রদানের জন্য ওই দরপত্রগুলো জমা নেওয়া হচ্ছিল। অভিযোগ ইউএনও অফিসের লোকজনকে জিম্মি করে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে বাক্স ভেঙে রক্ষিত দরপত্রগুলো ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা।
রোববার ২রা ফেব্রুয়ারী দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পরিষদের দ্বিতীয় তলায় ইউএনও অফিসের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় সমালোচনা-আলোচনা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন দরপত্র জমা দানের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবেনা। তারপরও সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া তাদের মধ্যে শাহজাহান নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অপরদিকে এঘটনায় ওই দিন রাতেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফয়শাল মাহমুদ পলাশ বাদি হয়ে দশ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০-১৫জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার জলমহালগুলো ইজারা প্রদানের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়। সেই মোতাবেক গত ২৯ জানুয়ারি থেকে দরপত্র জমা নেওয়া হচ্ছিল। এবং গত রোববার ২ ফেব্রুয়ারি ছিল জমাদানের শেষ তারিখ। কিন্তু হঠাৎ করে ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কালীপুর এলাকার সাইদুল, দয়ালের মোড়ের সাজু, কোমাইগাড়ীর শাহজাহান, হাট-নওগাঁর ফারুক, কালীতলা কাঠহাটি এলাকার শ্যামল, হাট-নওগাঁর এরশাদ, মাস্টারপাড়ার হাসিবুল, দয়ালের মোড়ের নিশান, হাট-নওগাঁর আব্দুর রশিদ এবং একই এলাকার ইয়াছিন আলীসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১৫জন সদর উপজেলা পরিষদের ভিতরে প্রবেশ করে। এবং হাতে লোহার রড ও হাতুড়ি নিয়ে দুতলায় ইউএনও অফিসের সামনে গিয়ে বারান্দায় রক্ষিত দরপত্র জমাদানের কাঠের বাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফয়শাল মাহমুদ পলাশ ও এমদাদুর রহমান জুয়েলসহ এসএম সিরাজুল ইসলাম নামের অপর একজনকে একটি রুমে আটকিয়ে রাখে। এরপর তাদের হাতে থাকা লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে দরপত্র রাখার কাঠের বাক্সটি ভেঙে জমাকৃত জলমহালের সকল দরপত্র বস্তায় করে নিয়ে যায়। পরে বিষয়টির আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওই দিন রাতেই থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলের দিকে জানতে চাইলে নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুঠোফোনে বলেন, এঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে শাহজাহান নামের এজাহার নামীয় এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
দরপত্র ছিনতাইয়ের বিষয়টি স্বীকার করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবনুল আবেদীন। তিনি মুঠোফোনে বলেন, এঘটনায় মামলা করা হয়েছে। একজন গ্রেপ্তার হয়েছে। দরপত্রগুলোর উদ্ধার কার্যক্রম চলমান আছে। জলমহালগুলো ইজারা প্রদানের জন্য দরপত্র জমার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবেনা। কারণ অনলাইনে সকল আবেদন আছে। তাই আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
বায়ান্ন/এসএ