ঢাকা, শুক্রবার ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১লা ফাল্গুন ১৪৩১

জাতিসংঘের প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে অকাট্য দলিল হবে: চিফ প্রসিকিউটর

বায়ান্ন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ০৫:৪৫:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবাবিরোধী অপরাধ নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের (ওএইচসিএইচআর) প্রতিবেদনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অকাট্য দলিল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর তদন্ত করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার একটি তথ্যানুসন্ধানী দল। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্যানুসন্ধানী প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগের সহিংস কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বিগত সরকার এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত ছিল। ক্ষমতায় থাকার জন্য হাসিনা সরকার ক্রমাগত নৃশংস পদক্ষেপ নিয়ে পদ্ধতিগতভাবে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করেছিলেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আজ প্রতিবেদনটি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, অস্ত্রের ব্যবহার এবং আহত-নিহতের পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, একটা পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র বহুবিস্তৃত (ওয়াইডস্প্রেড) ও পদ্ধতিগতভাবে (সিস্টেমেটিক) একটা জনগোষ্ঠীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তাদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য। এটা মানবতাবিরোধী অপরাধের পক্ষে একটা সুস্পষ্ট ও জোরালো প্রমাণ। এই প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে একটা এভিডেন্স (প্রমাণ) হিসেবে ট্রাইব্যুনালে আসবে।

তাজুল ইসলাম বলেন, যেহেতু জাতিসংঘ বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য একটা সংস্থা, তাই তাদের এ প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। কোনো দলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রতিবেদনটি করা হয়নি। তাদের (প্রসিকিউশন) সঙ্গেও কথা বলেননি জাতিসংঘের তদন্তকারীরা। তারা অপরাধীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। যেখানে কথা বলা দরকার, সেই জায়গায় কথা বলেছেন। সুতরাং এটা অকাট্য দলিল, প্রমাণ হিসেবে এই আদালতে ব্যবহার করা যাবে। 

তৎকালীন সরকারপ্রধানের দায়-দায়িত্বে (রেসপনসিবলিটি) এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে এবং ঘটনায় রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলো সম্পৃক্ত ছিল বলে উল্লেখ করেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, যেসব অফিসার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণে পাওয়া যাবে, জাতিসংঘ সুপারিশ করেছে প্রত্যেককে সাসপেন্ড (সাময়িক বরখাস্ত) করার জন্য ন্যায্য ও নিরপেক্ষ বিচার যাতে হতে পারে। চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ও এমনটা মনে করে।

আসামিদের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ আছে বলে জানান ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর। তিনি বলেন, শুধু তাদের (জাতিসংঘ) একটা কনসার্ন (উদ্বেগ) আছে যে মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপারটা যেটা আছে, সেটা তারা বলেছে একটা মরাটোরিয়াম (স্থগিত)। অর্থাৎ একধরনের মৃত্যুদণ্ড যদিও দেওয়া হয়, সেটা যাতে স্থগিত রাখা হয়, এ রকম একটা প্রস্তাব করেছে। এটার সুযোগ, যেহেতু আমাদের ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের কাছে ক্ষমতা আছে, তারা কী ধরনের দণ্ড দেবেন কী দেবেন না, সেটা পরে দেখা যাবে।

সূত্র: ইত্তেফাক

বায়ান্ন/একে