ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন সত্তরোর্ধ্ব রনো শীল। ক্ষুধার তাড়নায় এক বাড়িতে ঢুকে খাবার চান। বাড়ির লোকজন একটি থালায় ভাত ও তরকারি দেন। তিনি থালা নিয়ে চলে যান বাড়ির পাশের রেললাইনে। পাশেই থালা রেখে রেললাইনের পাশে ঘুমিয়ে পড়েন। এই ঘুম আর ভাঙে নি রনোর। ভাত না খেয়েই তিনি ঘুম থেকে চলে যান চিরঘুমে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ভূঁয়াই এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ব্যক্তির ছবি ছড়িয়ে পড়লে তার পরিচয় পাওয়া যায়।
মৃত ওই ব্যক্তির নাম রনো শীল। জুড়ীর ফুলতলা ইউনিয়নের কোনাগাঁও গ্রামে তার বাড়ি ছিল। ভিটামাটি বিক্রি করে দেওয়ায় তিনি পাশের বড়লেখা উপজেলার হরিপুর গ্রামে বোনের বাড়িতে থাকতেন। রনো মানসিক ভারসাম্যহীন ও চিরকুমার ছিলেন। ২০ ডিসেম্বর তিনি নিখোঁজ হন।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও মৃত ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রনো শীল কাউকে কিছু না বলে গত মঙ্গলবার বোনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এরপর আর সেখানে ফেরেননি। তিনি জুড়ীর ভূঁয়াই এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন। তবে কেউ তাকে চিনতে পারেননি। আজ দুপুরে স্থানীয় একটি বাড়িতে ঢুকে বলেন, ‘ক্ষুধা লেগেছে।’ পরে তাকে খাবার দেওয়া হলে তিনি থালা নিয়ে পাশের রেললাইনে চলে যান। কিন্তু তিনি থালা রেখে রেললাইনের পাশে ঘুমিয়ে পড়েন। তাকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে বিকেলে পথচারীরা ডাকাডাকি করলেও তিনি সাড়া দিচ্ছিলেন না। পরে স্থানীয়রা তার কাছে গিয়ে দেখেন তিনি মারা গেছেন।
এ সময় সেখানে হাজির হন স্থানীয় জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাছুম রেজা। তার কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। তার আগে অনেকে মুঠোফোনে মৃত ব্যক্তির ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। ছবি দেখে আত্মীয়স্বজন তাকে শনাক্ত করেন।
রনো শীলের আত্মীয় বড়লেখার হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা রন্টু শীল রাতে বলেন, তারা লাশ আনতে জুড়ী থানায় যাচ্ছেন।
জুড়ী থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আবদুল মান্নান বলেন, স্বজনেরা ফেসবুকে ছবি দেখে লাশটি রনোর বলে জানিয়েছেন।