
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে শালিস চলা অবস্থায় প্রেমিকের স্বজনদের মারপিটের শিকার হয়ে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রেমিকা। ঘটনাটি ঘটেছে দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের ভুজারিপাড়া এলাকায়।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি ) গভীর রাতে ওই নারী হামলার শিকার হন। ওই নারীর নাম সান্তনা রানী। সে ভুজারীপাড়া এলাকার মৃত সতিশ রায়ের স্ত্রী। প্রায় দেড় বছর আগে সান্তনা রানীর স্বামী সতিশ রায় মারা যান। মারা যাওয়ার পর এক ছেলে নিয়ে স্বামীর বাড়িতেই অবস্থান করছিল। এরপর থেকে একই এলাকার ২ সন্তানের জনক রাজকুমার নামে এক ব্যক্তি প্রায় ২ মাস আগ থেকে সান্তনা রানীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে রাজকুমার সান্তনা রানীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তা দৈহিক সম্পর্কে গড়ায়।
এঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে চিলাহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম এবং লোকজনদের সাথে নিয়ে গ্রাম্য শালিস বসে। শালিসে উভয়পক্ষকে নিয়ে সমঝোতা করার চেষ্টা করা হয়। পরে রাজকুমারের পরিবার বিচারের রায় মেনে না নেয়ায় স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে রাজকুমার রায়কে তার প্রেমিকা সান্তনা রানীর বাড়িতে রেখে দেয়। পরে রাজকুমারের স্ত্রী প্রতিমা রানী, বেকুর স্ত্রী আরতি রানী, অনন্ত রায়ের স্ত্রী মায়া রানী ও অনন্ত রায়ের ছেলে মানিক রায় সান্তনা রানীর বাড়িতে এসে তাকে এলোপাথাড়ি মারপিট শুরে করে। রাজকুমারের স্বজনরা জনপ্রতিনিধিদের সামনেই এ হামলার ঘটনা ঘটায়। হামলা চালিয়ে রাজকুমারকে জোরপূর্বক নিয়ে যায়। পরে জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় সান্তনা রানীকে আহত অবস্থায় দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
সান্তনা রানী বলেন, রাজকুমার আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। গ্রাম্য শালিসে উভয়পক্ষের লোকজন বসে মিমাংসা করার জন্য বসলে রাজকুমারের পরিবারের লোকজন মেনে নেয়নি। পরে শালিসের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে রাজকুমারকে আমার বাড়িতে রেখে দেয়। তখন তার পরিবারের সদস্যরা আমার বাড়িতে এসে আমাকে মারপিট করে রাজকুমারকে জোরপূর্বক নিয়ে যায়। সে আমার ক্ষতি করেছে আমি রাজকুমারকে স্বামী হিসেবে চাই। যারা আমাকে মারপিট করেছে তাদের বিচার চাই।
চিলাহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ জানান, আমরা শালিসে বসা থাকা অবস্থায় রাজকুমারের পরিবারের লোকজন গিয়ে ওই মহিলাকে মারপিট শুরু করে। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি। আজকের মধ্যে মিমাংসা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, পরকিয়াকে কেন্দ্র করে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। মহিলা বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছে৷ এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেনি।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ