অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই কমিশনগুলো গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক চিঠিতে এ কথা উল্লেখ করে বলা হয়, সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান এ বিষয়ক প্রজ্ঞাপন জারি করার নির্দেশনা দেন। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য ৬টি কমিশন গঠন করেছে, যেগুলো পুরোদমে কাজ করছে। এখন সংস্কার কমিশনের সংখ্যা ১১।
নতুন ৫ কমিশনের মধ্যে ১১ সদস্যের মিডিয়া সংস্কার কমিটির প্রধান হলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক কামাল আহমেদ। সদস্যরা হলেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, সম্পাদক পরিষদের প্রতিনিধি হিসেবে দ্য ফিন্যানসিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সচিব আখতার হোসেন খান, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন ওনার্সের (অ্যাটকো) প্রতিনিধি, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের ট্রাস্টি ফাহিম আহমেদ, মিডিয়া সাপোর্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক ও সাংবাদিক জিমি আমির, দ্য ডেইলি স্টারের বগুড়া জেলা প্রতিনিধি মোস্তফা সবুজ, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর টিটু দত্ত গুপ্ত এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুন।
১০ সদস্য বিশিষ্ট নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভিন হক। সদস্যরা হলেন ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ফেলো মাহীন সুলতান, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট'র অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার, নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হালিদা হানুম আক্তার, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা ফেরদৌসী সুলতান এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিশিতা জামান নিহা।
স্বাস্থ্যখাত সংস্কারে গঠিত ১২ সদস্যের কমিশনের প্রধান হয়েছেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি প্রফেসর একে আজাদ খান। সদস্যরা হলেন বিএসএমএমইউ এর জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ইনফরমেটিক অধিদপ্তরের প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন, পথিকৃৎ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর লিয়াকত আলী, গাইনোকলজিস্ট প্রফেসর ডা. সায়েবা আক্তার, শিশু স্নায়ুতন্ত্র বিভাগের প্রফেসর ডা. নায়লা জামান খান, সাবেক সচিব এম এম রেজা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা'র সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল) প্রফেসর ডা. মোজাহেরুল হক, আইসিডিডিআর, বি'র ডা. আজহারুল ইসলাম, স্কয়ার হাসপাতালের স্কয়ার ক্যান্সার সেন্টারের প্রফেসর ডা. সৈয়দ মো: আকরাম হোসেন, গ্রীন লাইফ সেন্টার ফর রিউম্যাটিক কেয়ার এন্ড রিসার্চের চিফ কনসালটেন্ট প্রফেসর ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, আইসিডিডিআর, বি'র শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য বিভাগের বিজ্ঞানী ডা. আহমেদ এহসানুর রাহমান এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী উমায়ের আফিফ।
বিলস-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতানউদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে গঠন করা হয়েছে ১০ সদস্যবিশিষ্ট লেবার রিফর্ম কমিশন। সদস্যরা হলেন সাবেক সচিব ড. মাহফুজুল হক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি তপন দত্ত, বাংলাদেশ লেবার কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম নাসিম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ম. কামরান টি রহমান, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ'র সভাপতি চৌধুরী আশিকুল আলম, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সাকিল আখতার চৌধুরী, আলোকচিত্রী ও শ্রমিক আন্দোলন সংগঠক তাসলিমা আখতার এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি (নাম প্রকাশ করা হয়নি)।
স্থানীয় সরকার বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ। আট সদস্যের কমিশনে সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফেরদৌস আরফিনা ওসমান, সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দিন, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আব্দুর রহমান, বিআইএসএস'র পরিচালক ড. মাহফুজ কবির, নারী উদ্যোগ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মাসুদা খাতুন শেফালী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: তারিকুল ইসলাম এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি (নাম প্রকাশ করা হয়নি)।
এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে নির্বাচন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কারে ছয়টি কমিশন গঠন করার ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন। বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান। দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
এর পর গত ১৭ অক্টোবর রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে অন্তর্র্বতী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান স্বাস্থ্য, গণমাধ্যমসহ আরও চার বিষয়ে সংস্কার কমিশন গঠনে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন।