জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মপন্থা নিয়ে তার হতাশা প্রকাশ করেছেন। প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "অনেকে হয়তো তার বক্তব্যে আশান্বিত হয়েছেন, কিন্তু আমি আশাহত। আমি আশা করেছিলাম, তিনি তার প্রজ্ঞা দিয়ে বর্তমান সংকট চিহ্নিত করবেন এবং নির্বাচনের একটি রূপরেখা দেবেন।"
মির্জা ফখরুল আরও উল্লেখ করেন যে, দেশের অর্ধেক সমস্যার সমাধান একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব। তিনি বলেন, "বিএনপি ক্ষমতায় আসুক বা না আসুক, একটি নির্বাচনই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের থামাতে পারে। কারণ জনগণের সমর্থন নিয়ে গঠিত একটি সরকারই পারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে।"
বর্তমান সরকারের ব্যর্থতার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, "সচিবালয়ে বসে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের রেখে কীভাবে সংস্কার করবেন? এখনও দ্রব্যমূল্যের সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেননি। সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। সরকার যদি সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে পারে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারে, তবে মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থা রাখতে পারবে।"
তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, "তরুণদের হাত ধরেই দেশ এগিয়ে যাবে, যেমনটি করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।"
মওলানা ভাসানীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, "তিনি ছিলেন আমাদের বটবৃক্ষ। তার উত্থান হয়েছিল একেবারে সাধারণ পরিবার থেকে। তিনি নিজেকে জনগণের কল্যাণে উৎসর্গ করেছিলেন এবং তাদের মহিমান্বিত করে সামনে এগিয়ে নিয়ে এসেছিলেন।"
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এবং সঞ্চালনায় ছিলেন কৃষক দলের নেতা এসকে সাদি। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ।
মওলানা ভাসানীর আদর্শ এবং বর্তমান সংকট নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে এ সভা রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আবির্ভূত হয়। বক্তারা সবাই দেশের সুশাসন এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
বায়ান্ন/এএস