আইনি জটিলতায় অকশন দিতে না পারায় রাজশাহীর বাঘা থানা চত্বরে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ব্যান্ডের প্রায় দুই শতাধিক পরিবহন ।এর মধ্যে মোটর সাইকেলের সংখ্যা বেশি।বাদ পড়েনি নদী থেকে তুলে আনা নৌকা ।
বছরের পর বছর এসব যানবাহন আটক রাখার ফলে বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। তবে এ থানায় যে সকল যানবাহন পড়ে রয়েছে তার তিন ভাগের দুই ভাগই মাদক পরিবহনের
আলামত সংক্রান্তে জব্দ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।সরেজমিন বাঘা থানা চত্বর ঘুরে দেখা গেছে, একটি ঝুপড়ি ঘরের নিচে ও বাইরে প্রায় দেড় শতাধিক মোটর সাইকেল-সহ
খোলা আকাশের নিচে বছরের পর বছর পড়ে রয়েছে বিভিন্ন ব্যান্ডের প্রাইভেটকার, মাইক্রো, ভ্যান, ট্রাক, মিনিট্রাক এবং বাস সহ সীমান্তবর্তী পদ্মা নদীতে মাদক বহনকৃত ইঞ্জিন চালিতনৌকা।
স্থানীয় লোকজন জানান, নিত্যদিনের রোদ-বৃষ্টি-ঝড় আর ধুলায় এসব গাড়ির যন্ত্রাংশে মরিচা ধরে গেছে। একই স্থানে দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকায় অনেক যানবাহন ইতোমধ্যে চলাচল ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে। ফলে কমে গেছে এর বাজারদর। অন্যদিকে আইনি জটিলতা থাকায় এসব গাড়ি নিলামে না তুলতে পারায় বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
বাঘা থানার অধিকাংশ কর্মকর্তাদের দাবি, জব্দকৃত যানবাহন রাখার জন্য আলাদা স্থানে নির্দিষ্ট গ্যারেজ করে দেওয়া দরকার । এতে করে সুরক্ষিত থাকবে ঐ সব পরিবহন, এতে করে সরকারের কোষাগারেও জমা হবে পর্যাপ্ত রাজস্ব। কিন্তু এখানে সে ব্যবস্থা নেই। ফলে একটি নম্বর বিহীন নতুন ট্রাক সহ বিভিন্ন ব্যান্ডের অসংখ্য পরিবহন এখানে পড়ে রয়েছে বছরের-পর বছর। যার অধিকাংশই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অনেক গাড়ি রয়েছে যেগুলোর ভেতরে-বাইরে ধূলা-ময়লা জমে যন্ত্রাংশ ক্ষয়ে খসে-খসে পড়ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ সাজ্জাদ হোসেন জানান, বিভিন্ন অপরাধে এসব যানবাহন জব্দ করা হয়েছে। কাগজ-পত্র না থাকায় সঠিক মালিকের কাছেও হস্তান্তর করা যাচ্ছে না। তবে এ থানায় জব্দকৃত যান বাহনের মধ্যে অধিকাংশই মাদক বহনের আলামত হিসাবে জমা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তাঁর মতে, শুধু বাঘা নয়, দেশের প্রায় সকল থানাতেই এমনি ভাবে শত-শত-যানবাহন পড়ে রয়েছে। এছাড়া দৈনিক অথবা মাসে যে পরিমাণ গাড়ি আমাদের এখানে জমা হচ্ছে, সে অনুসারে মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না। আইনি জটিলতার ফলে জব্দ হওয়া যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী জজ কোর্টের পিপি এড. নাসরিন আক্তার মিতার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকার বিষয়টি খুবই দু:খজনক। দ্রুততার সাথে এসব মামলা নিষ্পত্তি করলেই আমাদের সম্পদ গুলো রক্ষা পাবে।