বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে র্যাব-পুলিশ, বিজিবি ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগসহ পতিত স্বৈরশাসকের সহযোগীদের হামলায় আহত-নিহতদের পাশে দাঁড়ানোর মানবিক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে নাগরিক আলেমসমাজ।
সোমবার (১৯ আগস্ট) এ কর্মসূচির প্রথম দিন ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়া মৌলভীবাজারের এক তরুণ আলেমের শারিরীক অবস্থা ও চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে যান সংগঠনের সমন্বয়করা।
হাফিজ মাওলানা সালেহ আহমদ নামের ওই আলেম জানান, তিনি রাজধানীর যাত্রাবাড়ি এলাকার একটি মাদরাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে যোগ দিয়ে কাজলায় র্যাব-পুলিশের চতুর্মুখী হামলায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তার মাথা, হাত, পীঠ ও পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশত গুলি লাগে। মারাত্মক আহত অবস্থায় স্থানীয় ফার্মেসী ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার, পাঁচগাঁও ইউনিয়নের রক্তা গ্রামে ফিরে আসেন। এখনও তার মাথাসহ শরীরে একাধিক গুলি রয়ে গেছে। আরও চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও সেটি তিনি করাতে পারছিলেন না। খবর পেয়ে নাগরিক আলেমসমাজ তাকে
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ ও চিকিৎসা এগিয়ে নিতে কিছু অর্থসহায়তা প্রদান করে।
গুলিবিদ্ধ এই আলেমের শারিরীক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে তার গ্রামের বাড়িতে যান নাগরিক আলেমসমাজের প্রধান সমন্বয়ক সাংবাদিক নোমান বিন আরমান, সাংবাদিক ফায়যুর রাহমান ও সমন্বয়ক আদিব আহমদ সমন্বিত প্রতিনিধিদল।
সমন্বয়কদের তিনি জানান, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ১৯ জুলাই রাতে কর্মস্থলে ফিরে গেলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে তাৎক্ষণিক বিদায় করে দেয়। তবে এই অভিযোগটি সঙ্গে সঙ্গে খতিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি। চাকুরি হারা গুলিবিদ্ধ এই আলেম এখন বিপদসঙ্কুল সময় পার করছেন।
নাগরিক আলেমসমাজ এক বিবৃতিতে জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে র্যাব-পুলিশ, বিজিবি ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগসহ পতিত স্বৈরশাসকের সহযোগীদের হামলায় আহত-নিহত নিরপরাধ ছাত্রজনতা ও আলেমদের পাশে থাকার মানবিক উদ্যোগসহ অন্যান্য কার্যক্রম চলমান থাকবে।
প্রসঙ্গত, জুলাই-আগস্টজুড়ে সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে সহ¯্র মানুষ নিহত ও অসংখ্য ছাত্রজনতা, মাদরাসা শিক্ষার্থী-আলেম হতাহত করা হয়। ৩৬ দিনের এই আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নিলে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে পালিয়ে যান স্বৈরশাসকের খ্যাতি পাওয়া শেখ হাসিনা।