নির্ধারিত তারিখে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ ও ফি জমা দিয়েও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি এক শিক্ষার্থী। ওই শিক্ষার্থীর নাম দিলশাত জাহান তুলি। এতে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তুলির পরিবারের অভিযোগ, মৌলভীবাজারের বড়লেখা সরকারি কলেজে কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনা ও অবহেলায় এই ঘটনা ঘটেছে। তুলি বড়লেখা সদর ইউনিয়নের গঙ্গারজল গ্রামের ফারুক উদ্দিনের মেয়ে।
এদিকে বড়লেখা সরকারি কলেজের চরম খামখেয়ালিপনা ও অবহেলার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভুলে এইচএসসি’র ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ২৩০ জন শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সমন্বিত উপবৃত্তি প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
জানা গেছে, দিলশাত জাহান তুলি ২০২১ সালে বড়লেখা সরকারি কলেজ হতে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এ বছর অন্য সকল বিষয়ে ভালো নম্বর পেলেও জীববিজ্ঞানে তার ফল খারাপ হয়। এর ফলে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জীববিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার কথা। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে ফরমপূরণ ও টাকা জমা দেওয়ার পরও তার প্রবেশপত্র না পাওয়ায় তুলি পরীক্ষা দিতে পারেননি। গত ২৯ নভেম্বর তার জীববিজ্ঞান ১ম পত্রের পরীক্ষা ছিল। প্রবেশপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়েও তাকে ফিরে আসতে হয়েছে। এমন ঘটনায় সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে।
তুলির চাচা মুমিন উদ্দিন বলেন, আমার ভাতিজি এক বিষয়ের পরীক্ষার্থী। যথাসময়ে কলেজের এক শিক্ষকের কাছে ফি জমা দিয়ে সে ফরমফিলাপ করে। পরীক্ষার আগে এডমিট কার্ড বিতরণ শুরু হলে তুলি কলেজে যোগাযোগ করলে তাকে জানানো হয় পরীক্ষার আগের দিন অথবা পরীক্ষার দিন সকালে এডমিট কার্ড সংগ্রহ করতে। কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মতো পরীক্ষার দিন সকালে আমার এক ভাতিজাসহ তুলি এডমিট কার্ড আনতে কলেজে গেলে অধ্যক্ষ জাহেদ আহমদ বলেন, ‘তুলির কোনো ফরমফিলাপই হয়নি। এডমিট কার্ড আসবে কীভাবে।’
তখন ভাতিজা বলে ফরম ফিলাপের ফি দিয়ে ফরম ফিলাপ করেছে, তাহলে এডমিট কার্ড আসবে না কেন, আগেতো আপনারা জানিয়েছিলেন পরীক্ষার দিন সকালে এডমিটকার্ড নিতে। একথা বলতেই অধ্যক্ষ জাহেদ আহমদ খারাপ আচরণ করে কলেজ থেকে তাকে তাড়িয়ে দেন।
বড়লেখা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহেদ আহমদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এডমিট কার্ড বিতরণের সময় ওই ছাত্রী যোগাযোগ করেনি। তখন এডমিট কার্ড না আসার বিষয়টি অবগত করলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তার (তুলির) চাচা যোগাযোগ করেছিলেন, তাকে কলেজে আসতে বলেছি। কেন ফরম ফিলাপ হয়নি আলোচনা করলে বুঝা যাবে।
কলেজ গভর্নিংবডির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, বিষয়টি জানতাম না। কেউ অভিযোগও করেনি। এখন জেনেছি। তদন্ত করে বিষয়টি দেখবো।