মিরসরাইয়ে পারিবারিক কলহের জেরে রোজিনা আক্তার (২৫) কে নামে এক গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) রাত ৯ টায় মিরসরাই পৌরসভার ডাকবাংলো এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় এই ঘটনা ঘটে। রোজিনা আক্তারের ভাই মাসুদ রানা বাদী হয়ে ভগ্নিপতি জহুরুল ইসলামকে আসামী করে রবিবার (১৩ অক্টোবর) মিরসরাই থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রোজিনার স্বামী জহুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে।
জহুরুল ইসলাম জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার বাসিন্দা এবং রোজিনা আক্তার সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর থানার আবদুল মজিদের মেয়ে। চাকুরীর সুবাধে তারা মিরসরাইয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
জানা গেছে, শনিবার রাত ৯টায় মৃত অবস্থায় রোজিনা আক্তারকে মিরসরাই সেবা আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বামী জহুরুল ইসলাম। এসময় হাসপাতালে জহুরুল ইসলাম দাবী করেন কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে রোজিনা আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরবর্তীতে মিরসরাই সেবা আধুনিক হাসপাতাল থেকে লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বামী জহুরুল ইসলাম। এসময় জরুরী বিভাগের চিকিৎসক লাশের শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখে মিরসরাই থানায় খবর দেন। পরবর্তীতে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসেন এবং স্বামী জহুরুল ইসলাকে আটক করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মিরসরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শহীদুল্লাহ মামুন বলেন, জহুরুল ইসলাম মিরসরাইয়ের অর্থনৈতিক অঞ্চলের বসুন্ধরা গ্রুপের অডিটর হিসেবে কাজ করেন। চাকরির সুবাদে স্ত্রী রোজিনা আক্তার এবং সন্তানকে নিয়ে মিরসরাইয়ের ডাকবাংলো এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন তারা। শনিবার সন্ধ্যায় তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে স্বামী জহুরুলের সাথে রোজিনার ঝগড়া হয়। তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিলো দীর্ঘদিন। শনিবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রোজিনার লাশ উদ্ধার করা হয়। সুরতহালে লাশের শরীরে আঘাতে চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে তাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিলো আত্মহত্যার প্রচারণার জন্য। ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক আরিফুল হুদা বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই রোজিনা আক্তার মারা যান। গলায় এবং ঠোঁটের নিচে কাটা দাগ দেখে আমরা মিরসরাই থানায় খবর দিই। পরবর্তীতে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়।
মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল কাদের বলেন, গৃহবধু রোজিনা আক্তারকে হত্যার অভিযোগে তার ভাই মাসুদ রানা থানায় মামলা (নং-১৪) দায়ের করেছেন। হত্যায় জড়িত স্বামী জহুরুল ইসলামে কে গ্রেপ্তার করে রবিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হবে।