ঢাকা, শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ই আশ্বিন ১৪৩১

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে চালু না হতেই বন্ধ ঠাকুরগাঁও চিনিকলের আখ মাড়াই

রবিউল এহ্সান রিপন, ঠাকুরগাঁও: | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:৪১:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

আখ মাড়াই মৌসুম চালু না হতেই যান্ত্রিকত্রæটির কারণে আবার বন্ধ হয়ে যায় ঠাকুরগাঁওয়ের একমাত্র চিনিকল। যদিও এ সমস্যা সমাধানে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে আখ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সেতাবগঞ্জ, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের চাষিরা। একই সঙ্গে লোকসানের প্রহর গুনছেন তারা।

ঠাকুরগাঁও চিনিকলের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৪ ডিসেম্বর পঞ্চগড়, সেতাবগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁওয়ের ৫০ হাজার টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এবছর মাড়াই মৌসুম উদ্বোধন হয়। এরপরদিন ভোর থেকে যান্ত্রিকত্রæটি দেখা দেয়। এরপর থেকে দু-এক ঘণ্টা করে চিনিকল চললেও বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে। এখন যান্ত্রিকত্রæটির কারণে মিলটি আর চলছেই না। ফলে মিলে আখ মাড়াই কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ আছে।

মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও চিনিকল ঘুরে দেখা গেছে, মাড়াইয়ের জন্য নিয়ে আসা আখের গাড়ি লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। যান্ত্রিক ত্রæটির কারণে মাড়াইয়ের জন্য আখ নিচ্ছে না চিনিকল কর্তৃপক্ষ। ফলে বসে বসে লোকসানের প্রহর গুনছেন অনেক আখচাষি। আবার অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে চিনিকল সংলগ্নমাঠে আগের গাড়ি থেকে আখ ফেলে দিয়ে বাসায় চলে যান। ফলে আখগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে।

জেলার নারগুন এলাকার আখচাষি জলিল উদ্দিন বলেন, আমি এবার ৮ একর জমিতে আখ চাষ করেছি। এ বছর আখ দেওয়ার অনুমতিও আছে আমার কাছে। চিনিকলে দুই গাড়ি আখ নিয়ে এসেছি মাড়াইয়ের জন্য। এসে দেখি আখ নিচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ বলছে যান্ত্রিক ত্রæটির কারণে আখ মাড়াই বন্ধ আছে দুদিন ধরে।

এ চাষির অভিযোগ, যান্ত্রিক ত্রæটি হতে পারে। যদি আগে থেকে মিল কর্তৃপক্ষ মাইকিং করতো তাহলে আমাদের আখ নিয়ে এত কান্নাকাটি করতে হতো না। আমরা ক্ষেত থেকে আখ মাড়াইয়ের জন্য মিলে আনতাম না।

আরেক আখচাষি সামসুল বলেন, আমি ২০ একর জমিতে আখ চাষ করেছি। এত পরিমাণ আখ চাষ করে আমি বিপাকে পড়েছি এখন। লোকসানের প্রহর গুনতে গুনতে একদিন দেখা যাবে কোনো কৃষকেই আর আখ চাষ করবে না।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের জেলা আহ্বায়ক মাহাবুব আলম রুবেল বলেন, ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আজ অবধি চিনিকলটির তেমন যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন হয়নি। মিল কর্তৃপক্ষ চাষিদের আখ চাষে উদ্বুদ্ধ করার কথা বললেও যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের দিকে তেমন কোন জোরালো ভূমিকা নেই। ফলে কৃষকরা এর কুফল ভোগ করছে। মাড়াই করতে না পারায় আখ শুকিয়ে যাচ্ছে। লোকসানের মুখে চাষিরা। এমন চলতে থাকলে এ মিলটিও একেবারে বন্ধ হবে।

ঠাকুরগাঁও চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, চিনিকলে যান্ত্রিকত্রæটি দেখা দিয়েছে। শিগগির এ সমস্যা সমাধান করা হবে। সমস্যাটি কৃষকদের জানাতে সোমবার সকাল থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।