রেকর্ড রপ্তানি আয় হয়েছিল গত বছরের সেপ্টম্বর-অক্টোবরে। ওই বছরের নভেম্বর বাদ দিয়ে সদ্য সমাপ্ত বছরের শেষ মাসে আবারও রেকর্ড পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করেছেন উদ্যোক্তারা। ডিসেম্বরে মোট ৪৯০ কোটি ৭৬ লাখ ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবির) তথ্য অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত বছরের ডিসেম্বরের চেয়ে বেশি রপ্তানি আয় দেশে আগে কখনো আসেনি।
এর আগে একক মাসে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় এসেছিল ২০২১ সালের অক্টোবরে। ওই মাসে প্রবৃদ্ধি ছাড়িয়েছিল ৬০ শতাংশের বেশি। রপ্তানি আয় হয়েছিল ৪৭২ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
তার আগের মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বরেও রেকর্ড ৪১৬ কোটি ৫৪ লাখ ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। সেই মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৩৮ শতাংশ।
রোববার (২ জানুয়ারি) ইপিবি জানায়, ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৯০ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার বা ৪২ হাজার ১৪০ কোটি টাকার বেশি (ডলারপ্রতি বিনিময়মূল্য ৮৬ টাকার হিসাবে)। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ৪৮ দশমিক ২৭ শতাংশ।
এদিকে, রপ্তানি আয়ের এই প্রবৃদ্ধিতে বরাবরের মতোই প্রধান ভূমিকা রেখেছে তৈরি পোশাকখাত। ডিসেম্বরে ৪০৪ কোটি ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের (২০২০) একই সময়ের চেয়ে ৫২ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই- ডিসেম্বর) এক হাজার ৯৯০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৮ শতাংশ।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট রপ্তানি আয়ের মধ্যে তৈরি পোশাকখাত থেকেই এসেছে ৮০ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এর মধ্যে নিট পোশাক থেকে এসেছে এক হাজার ১৬৬ কোটি ১৬ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৩১ শতাংশ।
ওভেন পোশাক থেকে এসেছে ৮৭৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যেখানে প্রবৃদ্ধি ২৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।
ইপিবি আরও জানায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে দুই হাজার ৪৭০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরের (২০২০-২১) একই সময়ের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি। জুলাই-ডিসেম্বরে (ছয় মাস) তৈরি পোশাক ছাড়াও কৃষি প্রক্রিয়াজাত, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, হোম টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য ও হস্তশিল্প রপ্তানি আয় বেড়েছে।
তবে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয় কমেছে সাড়ে ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এছাড়া বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালসের রপ্তানি কমেছে সাড়ে ১১ শতাংশ। ডিসেম্বরে ৬৫ কোটি ৪০ লাখ ডলারের কৃষিপণ্য, ৭১ কোটি ৬০ লাখ ডলারের হোম টেক্সটাইল, ৫৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ৫৯ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া ৩৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের হিমায়িত মাছ ও ১০ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের ওষুধ রপ্তানি হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের জন্য সরকার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে চার হাজার ৩৫০ কোটি ডলার। তবে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি আয় ১৫ শতাংশ বেশি হয়েছে।