মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের প্রতিটি থানায় স্থাপিত নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক এবং গৃহহীন পরিবারের জন্য নির্মিত ঘর ভার্চূয়াল পদ্ধতিতে উদ্বোধন করেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উদ্বোধনের অংশ হিসেবে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর থানায় ১০ এপ্রিল রোববার সকাল ১১ টায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভার্চূয়াল লাইভে যুক্ত ছিলেন, থানার অফিসার ইনচার্জ শিপন বড়ুয়াসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যবৃন্দ।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ শরিফ হোসেন, রায়পুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি পীরজাদা মোঃ মাসুদ হোসাইন, রায়পুর প্রেস ক্লাবের সাঃ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ঢালী, সাংবাদিক দেলোয়ার হোসেন দুলাল, আলী আজগর রবিনসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন।
রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে ভার্সুয়াল বক্তব্যে পুলিশের আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, ২০২০ সাল থেকে এই ডেস্কের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালু হয়। এ পর্যন্ত এই ডেস্কে সারাদেশে প্রতিদিন ৪৬৫ জন, মাসে ১৩৯৬৮ জন মোট ৩৬৩১৬৮ জনকে সেবা দেয়া হয়েছে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার লক্ষ্যে ‘দেশের প্রতিটি থানায় একটি গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহনির্মাণ’ শীর্ষক কর্মসূচি গ্রহণ করে বাংলাদেশ পুলিশ। বাংলাদেশ পুলিশের সহযোগিতায় দেশের ৫২০টি থানায় মোট ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয় ৫২০টি বাড়ি। সরকারের এমন উদ্যোগে আনন্দিত গৃহহীন মানুষও। মুজিবর্ষে বছরব্যাপী নানা আয়োজন সাজিয়েছিল বাংলাদেশ পুলিশ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে কিছু পরিকল্পনা পুরোপুরি বাস্তবায়িত না হওয়ায় সাশ্রয় হয় বেশকিছু অর্থ। এই অর্থেই প্রধানমন্ত্রীর গৃহ নির্মাণ প্রকল্পে শামিল হয় তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি তার বক্তব্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই হেল্প ডেস্কটি পরিচালিত হবে। একজন প্রশিক্ষিত নারী পুলিশ কর্মকর্তা এটি পরিচালনা করবেন। প্রত্যেক সেবা প্রার্থীর নাম রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ থাকবে। সমস্যার কথা লিখিত আকারে রেখে সঠিক তদন্তপূর্বক আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে ১৫ আগষ্ট নিহত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারবর্গ, পুলিশের এসবি হাসিবুর রহমান, করোনায় নিহত ব্যাক্তিবর্গের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি আরো আরো বলেন, আমরা মানুষের সেবার প্রতি সবসময় দৃষ্টি দিই, পুলিশকেও সেভাবে মানুষের সেবার নির্দেশ দিয়েছি। জাতির জনকের কথা অনুযায়ী, পুলিশ হবে জনগনের পুলিশ। নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধিদের ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য সবসময় সততার সহিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। আদালতে নিরীহ জনগনকে বিনামূল্যে আইনী সেবা দেয়ার জন্য লিগ্যাল এইড গঠন করেছি, পর্যাপ্ত বাজেটও দিয়েছি। দেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবেনা, একটি মানুষকে ঘর নির্মান করে দেয়ার চেয়ে উত্তম কাজ আর হতে পারেনা, পুলিশ সেই কাজটিই করেছে। তিনি পুলিশকে সততার সহিত কাজ করার আহবান জানান। সবাইকে নববর্ষে ও ঈদুল ফিতরের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি এই ডেস্ক ও গুহ হস্তান্তরের শুভ উদ্ভোধন করেন।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের এসআই নাজমুন নাহার স্বপ্না তার বক্তব্যে বলেন, এই ডেস্কে ২৪ ঘন্টা আমরা সেবা দিই। সেবাপ্রার্থী শিশুদের কাছে আমরা মা, প্রতিবন্ধিদের কাছে আমরা বন্ধু, নারী ও বয়স্কদের কাছে আমরা আপনজন হয়ে কাজ করি।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া জানান, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহনির্মাণ’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় রায়পুর থানা এলাকার চরকাচিয়ায় একটি দৃষ্টি নন্দন ঘর নির্মাণ করে অসচ্ছল জাকির হোসেনকে হস্তান্তর করা হয়েছে।