নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সংবাদ প্রকাশের কারণে দৈনিক কালবেলা পত্রিকার প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর মাহমুদকে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হামলা চালিয়েছে। জানা গেছে, চাঁদা দাবির ঘটনায় ছাত্রদল নেতা ইয়াসিন মিয়ার নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়। আহত সাংবাদিক জাহাঙ্গীর মাহমুদের মাথা ও শরীর ইট দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয় এবং এর পরপরই ইয়াসিন মিয়া বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকা তোলপাড় সৃষ্টি করেন।
হামলার প্রতিবাদে রূপগঞ্জের সাংবাদিক সমাজ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করলে বৃহৎ প্রতিবাদ কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর মাহমুদ নিয়মিতই ইয়াসিন মিয়া ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে মাদক, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করতেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৫ দিন ধরে ইয়াসিন মিয়া জাহাঙ্গীর মাহমুদের কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছিলেন। দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ইয়াসিন মিয়া বিভিন্ন সময় তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
রোববার (১৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোলাকান্দাইল দক্ষিণপাড়া ৫নং ক্যানাল এলাকায় ইয়াসিন মিয়া ও তার বাহিনী ৪০ থেকে ৫০ জনের সন্ত্রাসী দল নিয়ে জাহাঙ্গীর মাহমুদকে অবরুদ্ধ করে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় সন্ত্রাসীরা তাকে ইট দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। জাহাঙ্গীর মাহমুদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ইয়াসিন মিয়া কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে এলাকা ত্যাগ করেন। পরে জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহমেদ বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাশাপাশি রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জানান, বিএনপি কোনো সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ বা অপরাধীকে সমর্থন করে না, এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘এটি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। ইতিমধ্যে যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়েছে এবং হামলার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে’।
এই হামলা রূপগঞ্জের সাংবাদিকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এবং তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/একে