১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) তদন্ত সংস্থার উপ-পরিচালক (তদন্ত কর্মকর্তা) মো. আতাউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গণহত্যার অভিযোগ আনা নিহত সিয়ামের বাবার আইনজীবী অভিযোগ দেওয়ার পর থেকেই আমরা নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের চিন্তাভাবনা করেছি।
এর মাধ্যমে বুধবার (১৪ আগস্ট) রাতেই তদন্ত শুরু করেছে তদন্ত সংস্থা। এর আগে অভিযোগ রেজিস্ট্রার হিসেবে গ্রহণ করে তদন্ত সংস্থা। তবে কতদিনের মধ্যে এই তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন অভিযোগকারীদের জানানো হবে সেটি নিশ্চিত করেননি তিনি।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, বুধবার দুপুর দেড়টায় আমরা অভিযোগটি গ্রহণ করেছি। অভিযোগটি নিবন্ধন বইয়ে নিবন্ধনভুক্ত করা হয়েছে। এই নিবন্ধনের মানে মামলা হয়েছে।
অপরাধের ধরনে বলা হয়েছে, এক থেকে নয় নম্বর আসামির নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশ্যে যে অপরাধা করেছে তা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ।
উল্লেখ্য, ট্রাইব্যুনালে কোনো অভিযোগ নিবন্ধনের পর তা মামলা হিসেবে গণ্য করা হয়।
এর আগে বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় লিখিত অভিযোগ করেন। তদন্ত সংস্থার উপ-পরিচালক (প্রশাসন) ও তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগটি গ্রহণ করেন। পরে তা অভিযোগ নিবন্ধন বইয়ে নিবন্ধন করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান আরও বলেন, আমরা তদন্তকাজও শুরু করে দিয়েছি। আপাতত পেপারওয়ার্ক করছি। শেখ হাসিনার সঙ্গে অন্য যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক গোয়েন্দাপ্রধান হারুন অর রশীদ।
এসব আসামির পাশাপাশি আবেদনে নাম উল্লেখ না করে শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা চাওয়া হয়েছে।