দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) আরও পাঁচ প্রার্থী।
তারা হলেন গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) সামসুদ্দিন খান, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের জহিরুল ইসলাম, হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনের শংকর পাল, সুনামগঞ্জ-১ আসনের (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর) আবদুল মান্নান তালুকদার ও দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ) আসনের মাহবুব আলম।
নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার পর ভোট থেকে এখন পর্যন্ত সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন জাতীয় পার্টির ১১ জন প্রার্থী। কেন তারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন?
তাদের কেউ কেউ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের অসহযোগিতা, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ এবং চাপ ও হুমকির কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন গাজীপুর-৪ আসনের জাপার প্রার্থী সামসুদ্দিন খান। তিনি মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) কাপাসিয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা ঘোলাটে। বিভিন্ন চাপ ও হুমকি আছে আমার ওপর।
টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম সরে দাঁড়িয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর এনায়েত হোসেনকে সমর্থন দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে এক পথসভায় তিনি বলেন, উপজেলা জাতীয় পার্টির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেবেন তারা।
এদিকে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন সুনামগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থী আবদুল মান্নান তালুকদার। তিনি মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন। আবদুল মান্নান তালুকদার বলেন, আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি, এটা আসন ভাগাভাগি ও প্রহসনের নির্বাচন। কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগও করেন তিনি।
একই রকম অভিযোগ করে সোমবার হবিগঞ্জ-২ আসনের জাপার প্রার্থী শংকর পাল এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
এছাড়া ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন দিনাজপুর-২ আসনের জাপার প্রার্থী মাহবুব আলম। তিনি বলেন, বিশেষ করে ভোট গ্রহণ, গণনা এবং ফলাফল ঘোষণা কতখানি নিরপেক্ষ হবে, এই বিষয়ে আমি সন্দিহান। তিনি মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে বিরল উপজেলা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন।
এর আগে গত রোববার নির্বাচন নিয়ে ‘প্রহসন, আসন ভাগাভাগির ও একতরফা’ অভিযোগ তুলে জাতীয় পার্টির আরও তিন প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তারা হলেন বরিশাল-২ ও ৫ আসনের ইকবাল হোসেন, বরগুনা-১ আসনের খলিলুর রহমান, গাজীপুর-১ ও ৫ আসনের এম এম নিয়াজ উদ্দিন।
তারও আগে নির্বাচন সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের প্রার্থী আলাউদ্দিন মৃধা, সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ-রায়গঞ্জ) আসনের জাকির হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ছালাউদ্দিন খোকা মোল্লা।
প্রসঙ্গত, এ নির্বাচনে ২৬৫ আসনে জাপার প্রার্থী ছিল। এর মধ্যে ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে দলটির সমঝোতা হয়। এসব আসন থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তুলে নিয়েছে। বাকি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের তেমন প্রচার বা তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। এর মধ্যে ১৩টি আসনের ১১ জন প্রার্থী (দুজন প্রার্থী দুটি করে আসনে ছিলেন) ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।