হিজাব পরা একজন শিক্ষার্থীকে ঘিরে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিচ্ছে একদল তরুণ। তাদের প্রত্যেকের কাঁধে গেরুয়া উত্তরীয়। ভয় পেয়ে গুটিয়ে না গিয়ে হিজাব পরিহিত শিক্ষার্থী পাল্টা ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দিচ্ছেন। জানা গেছে, ভারতের কর্ণাটকের প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজের ওই ছাত্রীর নাম মুসকান। এই ঘটনায় নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।
মুসকান বলেন, আমি যখন কলেজে ঢুকছিলাম, তখন বাধা দেওয়া হয়। জিজ্ঞেস করা হয়, আমি কেন বোরখা পরে এসেছি? কিন্তু আমি এ সব নিয়ে মোটেও চিন্তিত নই।
সে দিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে মুসকান বলেন, আমাকে দেখেই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়া শুরু হয়। আমিও পাল্টা ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দিতে থাকি। তার দাবি, উপস্থিত গেরুয়া উত্তরীয় পরিহিতদের কয়েক জনকে চিনতে পেরেছেন তিনি। কারণ তারাও মুসকানের সহপাঠী। তবে বেশির ভাগই বহিরাগত।
মুসকান বলেন, পড়াশোনা করা আমাদের অগ্রাধিকার। এক টুকরো কাপড়ের জন্য (হিজাব) ওরা আমাদের পড়াশোনা করার অধিকারটাই ছিনিয়ে নিতে চায়।
স্কুল-কলেজে হিজাব পরে আসা যাবে না, এই দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে পথে নেমেছে কর্নাটকের কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো। শান্তিপূর্ণ অবস্থান থেকে তা ক্রমশ হিংসাত্মক আকার নিচ্ছে। তেমনই ঘটনা ঘটেছিল মাণ্ড্য প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজে। সেখানে হিজাব পরিহিত মুসকানকে ঘিরে ধরে এক দল মানুষের ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পাল্টা মুসকানও ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দেন। সেই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
মুসকান আরও বলেন, গত সপ্তাহ থেকে এটা শুরু হয়েছে। আমি বরাবরই বোরখা আর হিজাব পরতে অভ্যস্ত। ক্লাসে বোরখা খুলে হিজাব পরে নিই। হিজাব এখন যেন আমার অঙ্গ হয়ে গেছে। কলেজের অধ্যক্ষও কোনো দিন কিছু বলেননি। বহিরাগতরা এটা শুরু করেছে।
এই পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষ আমাদের বোরখা আনতে মানা করেছেন। কিন্তু হিজাবের দাবিতে আমাদের প্রতিবাদ চালু থাকবে। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের বাণিজ্য শাখার ওই ছাত্রী বলেছেন, আমার হিন্দু বন্ধুরাও আমার সঙ্গে আছে। আজ সকাল থেকে একের পর এক ফোন পাচ্ছি। আমি আশ্বস্ত।