উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারী বৃষ্টির পানির প্রভাবে দেশের ১০ জেলায় প্রায় ৩৬ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকালের এক তথ্য বিবরণীতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই বন্যায় বিকাল পর্যন্ত ১০ জেলায় এসব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে বন্যার পানিতে ডুবে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় একজন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়।
গত ২০ আগস্ট থেকে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানায়, এখন পর্যন্ত বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ১০। সেগুলো হলো, কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী ও মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট ও লক্ষ্মীপুর। এসব জেলার ৬৫ উপজেলা বন্যায় প্লাবিত। এই ১০ জেলায় মোট ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৪০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক তথ্য বিবরণী অনুযায়ী, পানিবন্দি বা ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দিতে মোট ২ হাজার ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় মোট ৮২ হাজার ৬৯৪ জন লোক এবং ৭ হাজার ৭৫৫টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
১০ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য ৪৯২টি মেডিক্যাল টিম চালু রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৩ কোটি ৩২ লাখ নগদ টাকা, ১৯ হাজার ৬৫০ টন চাল এবং ১৫ হাজার বস্তা বা প্যাকেট শুকনো ও অন্যান্য খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুত রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বন্যায় আক্রান্ত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, মেডিক্যাল টিম ও অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।
ফেনী জেলার বন্যাকবলিত এলাকায় সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। সেনাবাহিনী থেকে ১৬০ জন সদস্য ৪০টি উদ্ধারকারী যান ফেনী জেলায় পাঠানো করা হয়েছে।
এ ছাড়া ১টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। নৌবাহিনীর ৭১ জন সদস্য ও ৮টি উদ্ধারকারী যান কাজ করছে। বিজিবি সদস্যসহ আরও নৌযান আনানো হচ্ছে।