লোককবি রাধারমণ দত্ত পুরকায়স্থের স্মৃতি বিজড়িত সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামে রাধারমণ দত্ত কমপ্লেক্সের জায়গা নির্ধারণ করার সাত বছর অতিবাহিত হলেও নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় সংস্কৃতিকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলার সাংস্কৃতিক সংগঠক ও রাধারমণ অনুরাগীরা জানান, ২০১৫ সালে বৈষ্ণব পদাবলির মহারাজা লোককবি রাধারমণ দত্ত পুরকায়স্থের মৃত্যুশতবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রাষ্ট্রীয়ভাবে তিনদিনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। জন্মভূমি জগন্নাথপুর উপজেলায় এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী স্থানীয় সংসদ সদস্য (বর্তমান পরিকল্পনা মন্ত্রী) এমএ মান্নান প্রধান ও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
মন্ত্রীদ্বয় তাদের বক্তব্যে জগন্নাথপুরে রাধারমণ কমপ্লেক্স নির্মাণের ঘোষণা দেন। সভা শেষে দুই মন্ত্রী কেশবপুর বাজার সংলগ্ন ভূমিতে রাধারমণ দত্তের কমপ্লেক্সের সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে কমপ্লেক্সের জায়গার স্থান নির্ধারণ করেন।
রাধারমণ স্মৃতি সংসদের সভাপতি আফরোজ আলী জানান, দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে জায়গা নির্ধারণের সাত বছর অতিবাহিত হলেও রাধারমণ দত্তের কমপ্লেক্সের কাজের কোন অগ্রগতি না হওয়ায় আমরা ব্যথিত।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব বলেন, রাধারমণ দত্ত তিন হাজারের মতো গান রচনা করে আমাদের লোকসংস্কৃতির ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন। তার স্মৃতি বিজড়িত কেশবপুর গ্রামে একটি কমপ্লেক্স হোক এটা সারাদেশের সংস্কৃতি অনুরাগীদের দাবি।
তিনি রাধারমণ দত্তের মতো গুণী কবিকে মরণোত্তর একুশে কিংবা স্বাধীনতা পদক দেওয়ার দাবিও জানান।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আকমল হোসেন বলেন, প্রতিদিন দেশ-বিদেশের মানুষ কেশবপুর গ্রামে রাধারমণ দত্তের শেষ স্মৃতিচিহ্ন সমাধি দেখতে আসেন। এখানে একটি কমপ্লেক্স থাকলে সংস্কৃতির চর্চা আরও বিকশিত হতো।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম বলেন, ভূমি জটিলতায় কমপ্লেক্স স্থাপন আটকে ছিল। বর্তমানে ভূমি জটিলতা নিরসন হয়েছে। আশা করছি রাধারমণ দত্ত কমপ্লেক্স অচিরেই হবে।
তিনি বলেন, গত বছর সংস্কৃতি মন্ত্রী রাধারমণ দত্তের বাড়ি পরিদর্শন এলে বিষয়টি সাংস্কৃতিক কর্মীরা তার নজরে আনলে তিনি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।