বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এক হত্যাচেষ্টা মামলায় শহীদ বুদ্ধিজীবি শহিদুল্লাহ কায়সারের মেয়ে ও জহির রায়হানের ভাতিজি ই-কর্মাস অ্যাসোসিয়েশনের (ই-ক্যাব) সাবেক সভাপতি এবং অভিনেত্রী শমী কায়সারের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৬ নভেম্বর) তার বিরুদ্ধে মামলার শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাকে আদালতে হাজির করে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ঘটনার সঙ্গে শমী কায়সার সরাসরি জড়িত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বানচাল করতে তিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অর্থায়ন করেছিলেন। টাকার উৎস খুঁজে বের করতে তাকে রিমান্ডে নেওয়া দরকার।
নিজেকে নির্দোষ দাবি করে শমী কায়সার আদালতে বলেন, আমি ইন্টারনেট চালু করার কথা বলেছিলাম। ঘটনার সময় আমি বনানীতে ছিলাম। আমি ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবিও জানিয়েছি। তাই আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।
অপরদিকে আসামিপক্ষে জামিন চেয়ে আবেদন করা হলেও তা না ম্ঞ্জুর করেন আদালত। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত শমী কায়সারের জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর উত্তরার ৪নং সেক্টরের ৬নং রোডের ৫৩নং বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই ইশতিয়াক মাহমুদ নামে এক ব্যবসায়ীসহ অন্যান্যরা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। উত্তরা পূর্ব থানার ৪নং সেক্টরের আজমপুর নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাই স্কুলের সামনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ হামলা চালায় এবং গুলিবর্ষণ করে। এ সময় ইশতিয়াকের পেটে গুলি লাগে। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর ইশতিয়াক মাহমুদ বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১২৬ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি শমী কায়সার।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ১৪ আগস্ট ই-ক্যাবের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন শমী কায়সার। তিনি আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধো বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ছিলেন।
বায়ান্ন/এমএমএল/একে