আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-সহ দাতা সংস্থার ঋণের ২০৫ কোটি (২ দশমিক ০৫ বিলিয়ন) ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে যুক্ত হয়েছে। এর ফলে আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ এখন ২১ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার (দুই হাজার ১৫২ কোটি ৩১ লাখ ৪০ হাজার ডলার)।
আর বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভের আকার দাঁড়ালো দুই হাজার ৬৬৭ কোটি ৬০ লাখ ৮০ হাজার (২৬ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন) ডলারে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাতে এ খবর নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
জানা গেছে, আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার (১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন), দক্ষিণ কোরিয়া, আইবিআরডি ও আইডিবির ঋণের ৯০ কোটি ডলার আসায় রিজার্ভ এই উচ্চতায় পৌঁছালো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২৬ জুন পর্যন্ত মোট রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৪৬২ কোটি ৬০ লাখ ৪০ হাজার (২৪ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন) ডলার। আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল এক হাজার ৯৪৭ কোটি ৩১ লাখ ৪০ হাজার (১৯ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন) ডলার।
এরআগে, গত সোমবার (২৪ জুন) ওয়াশিংটনে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য ঋণের তৃতীয় কিস্তি দেওয়ার অনুমোদন হয়।
আইএমএফের ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার এসেছে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। আর দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে প্রায় ৬৮১ মিলিয়ন ডলার আসে গত বছরের ডিসেম্বরে।
বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নানা কারণে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের চাপের মুখে পড়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ)। বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়ে ক্রমাগত চলতি হিসাবের ঘাটতিও বেড়েছিল বাংলাদেশের। ডলারের বিপরীতে টাকা মান কমতে থাকলে প্রভাব পড়ে জ্বালানির দর ও আমদানিতে।
তখন দ্রুত ক্ষয় হতে থাকা রিজার্ভ বাড়াতে বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চেয়ে আবেদন করে ২০২২ সালের জুলাইতে। বিভিন্ন ধাপের আলোচনার পর ওই ওই বছরের নভেম্বরে ঋণ চুক্তি অনুমোদন দেয় সংস্থাটি।
পরে ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির পরের কিস্তিগুলো সমান অর্থ থাকার কথা ছিল। কিন্তু রিজার্ভ আরও কমে যাওয়ায় তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিতে বেশি অর্থ চায় বাংলাদেশ।
ইতোমধ্যে বেশ কিছু কঠিন শর্তের বাস্তবায়ন ও আগামীতে আরও বড় সংস্কার কার্যক্রমের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সংস্থাটি তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলারের পরিবর্তে ১১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিতে সম্মত হয়ে। তবে মোট ঋণের পরিমাণ এবং মেয়াদ একই থাকবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আইএমএফের তৃতীয় কিস্তির অর্থ পায় বাংলাদেশ। একই সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া, আইবিআরডি ও আইডিবির ঋণের ৯০ কোটি ডলার পায় বাংলাদেশ।