মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রলীগের কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমীরুল হোসেন চৌধুরী (আমিন) ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটির জন্য জীবনবৃত্তান্ত আহ্বান করা হয়েছে।
একই সঙ্গে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের আগামী ২১ মে সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে দুপুর ২.৩০ ঘটিকার মধ্যে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে বলা হয় ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন না হলেও মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। মেয়াদোত্তীর্ণ ওই কমিটিগুলোকে কমিটি বিলুপ্তির বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো: আসাদুজ্জামান রনি ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রনির ঘোষিত কমলগঞ্জ উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত করা হয়েছে। তবে কমলগঞ্জ উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি দীর্ঘদিনেও কেন অনুমোদন করা হয়নি সে বিষয়ে ওই নেতা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তৃণমুলে গুঞ্জন রয়েছে বিলুপ্ত কমিটির নেতারা কর্মী বান্ধব ছিলেন। তারা নেতা তোষামোদ করেননি বলেই তাদের কমিটি অনুমোদন না করেই মেয়াদোত্তীর্ণের অভিযোগ তুলে বিলুপ্ত করা হয়েছে।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ এক যুগ পর ২০১৭ সালের ৫ মার্চ সম্মেলনের মাধ্যমে রাহাত ইমতিয়াজ রিপুলকে সভাপতি ও মো. শাকের আলী সজীবকে সাধারণ সম্পাদক করে কমলগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের ১৭ সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়। মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান রনি ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রনি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এক বছরের জন্য এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। একই দিনে আব্দুল হাকিমকে সভাপতি ও হাসান আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করে ২ সদস্যের কমলগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগ এবং মিনহাজ নাসিরকে সভাপতি ও রিংকু মল্লিককে সাধারণ সম্পাদক করে ২ সদস্যের কমলগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর কেটে গেছে ৫ বছর। এ সময়ের মধ্যে কমলগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ ৩ বার পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দিলেও রহস্যজনক কারণে সেই কমিটি অনুমোদন হয়নি।
এদিকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কমলগঞ্জ উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করার পর প্রকাশ্যে কেউ কোনো মন্তব্য করার সাহস দেখাননি। তবে ভেতরে ভেতবে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন স্ট্যাটাসের মন্তব্যে।
কমলগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা লিখেছেন সিভি জমার রাজনীতি প্রাণের সংগঠনের গৌরবোজ্জল ইতিহাস ধ্বংস করছে। এ প্রথার কারণে ত্যাগীরা অবমূল্যায়িত হচ্ছেন। ছাত্রলীগের রাজনীতি না করে তারা নেতৃত্বে বসছেন। এর ফলে উচ্চ ফলনশীল এ হাইব্রিড নেতাদের কর্মীরা ঠিক মতো মানে না। কর্মীরা দলের কাজ ঠিক মতো না করায় নেতার সাথে কর্মীর দুরত্ব বাড়ছে। এতে সাংগঠনিক কার্যক্রম ভেঙ্গে পড়ছে। সংগঠনের স্বার্থে এ প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে আসার আহবান জানান তিনি। আবার কেউ কেউ আগত কমিটি পরীক্ষিত নেতাদের দিয়ে কর্মী বান্ধব কমিটি হবে বলেও মন্তব্য করেছেন।