ঢাকা, রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

কুখ্যাত রাজাকার খোকার ফাঁসির রায় দেয়ায় আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরন

বগুড়া প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : বুধবার ২৪ নভেম্বর ২০২১ ০৮:১৩:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের মত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার দায়ে বগুড়ার আদমদীঘির কালাইকুড় গ্রামের থানা শান্তি কমিটির (পিস কমিটি) সভাপতি মুসলিমলীগ (কনভেনশন) নেতা (বর্তমান মৃত) আব্দুল মজিদ তালুকদার এর ছেলে বিএনপির সাবেক এমপি কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল মোমিন তালুকদার খোকাকে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফাঁসির রায় দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরন করা হয়েছে। মিছিলটি উপজেলা সদরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিন শেষে বাসষ্ট্যান্ড চত্বরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আঃ লীগের সহ-সভাপতি আবু রেজা খান, নাজিমুল হুদা খন্দকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন, সুমিনুল ইসলাম সুমন, উপজেলা মহিলা আঃ লীগের সভাপতি মনজু আরা বেগম, সম্পাদক সালমা বেগম চাঁপা, সদর ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হক আবু, মিজানুর রহমান বাবু, রফিকুল ইসলাম, মিহির কুমার সরকার, আবু বক্কর সিদ্দিক, দিব্যেন্দু কুন্ড দুলাল, বেলাল হোসেন, কাজল সরকার প্রমূখ। 

বক্তারা বলেন, রাজাকার খোকার ফাঁসির রায় হওয়ায় আমরা খুব আনন্দিত হয়েছি। অতিদ্রুত রায় কার্যকরের আশা পোষন করেন তারা। এদিকে কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল মোমেন তালুকদার খোকার ফাঁসির রায় হওয়ায় মামলার বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবিদ আলী আবেগপ্রবন ভাবে বলেন, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল রাজাকার খোকার ফাঁসির রায় দেওয়ায় আমি খুব খুশী। তিনি আরো বলেন আমার মৃত্যুর আগে কুখ্যাত রাজাকার খোকার ফাঁসির রায় কার্যকর দেখে যেতে চাই। অন্যদিকে এ মামলার অন্যতম সাক্ষী সাংবাদিক এম সরওয়ার খান এ বছরের মাঝামাঝি সময় মারা যান। তার ইচ্ছাছিল রাজাকার আব্দুল মোমিন তালুকদার খোকার রায় দেখে যাওয়ার। কিন্তু তাঁর আর রায় দেখে যাওয়া হয়নি। তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যত তাড়াতাড়ি রায় কার্যকর করতে। 

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে আদমদীঘি থানার কায়েতপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সুবিদ আলী বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আব্দুল মোমেন তালুকদার খোকার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করে। বিজ্ঞ আদালত সুবিদ আলীর আবেদনটি এজাহার হিসাবে লিপিবদ্ধ করার জন্য আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিলে অফিসার ইনচার্জ তা এজাহারভুক্ত করে অধিকতরও তদন্ত সহ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মামলাটি মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করে। এরপর বিভিন্ন সময়ে কয়েক দফায় তদন্ত শেষে খোকার বিরুদ্ধে আনীত মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ প্রমানিত হলে ২০১৮ সালের ৩মে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আব্দুল মোমেন তালুকদার খোকার বিরুদ্ধে চুড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তদন্তে অবৈধ ভাবে আটক, অপহরন, অগ্নিসংযোগ, লুন্ঠন, হত্যা ও গনহত্যার তিনটি অভিযোগ আনা হয়।  

বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নের্তৃত্বে ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গতকাল ২৪ নভেম্বর বুধবার কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল মোমেন তালুকদার খোকার বিরুদ্ধে ফাঁসি (মৃত্যুদন্ড) রায় ঘোষনা করেন।