কক্সবাজারের চকরিয়ার বরইতলী নতুন রাস্তার মাথাস্থ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক লাগোয়া শত বছরের পুরনো বদ্ধ জলাশয় ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ করছে হাশেম উদ্দিন নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। এতে ওই এলাকায় পরিবেশের উপর বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। ইতিপূর্বে ওই প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্থানীয় সামাজিক কবরস্থানের জমি জবর দখল ও ছরাখাল দখল করে পেট্রোল পাম্পের সীমানা দেয়াল নির্মানেরও অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বরইতলী ইউনিয়নের একতা বাজার সংলগ্ন নতুন রাস্তার মাথায় মহাসড়কের পূর্বপাশে একটি বিশাল জলাশয় রয়েছে। যুগ যুগ ধরে ওই জলাশয়ে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন স্থানীয় অনেক লোকজন। পাশাপাশি এই জলাশয়ের পানি ব্যবহার করে আসছে পার্শ্ববর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, একতা বাজারের সহস্রাধিা ব্যবসায়ী ও এলাকার অন্তত দুই শতাধিক পরিবার। এলাকার লোকজন জানায়, নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে স্থানীয় প্রভাবশালী হাশেম উদ্দিন দিনে ও রাতে মিনি ট্রাক (ডাম্পার) দিয়ে পাহাড় থেকে মাটি এনে জলাশয়টি ভরাট করছে। আর ভরাট কাজের মাটি বিলিয়ে দিতে কাজ করছেন অন্তত ১০-১২জন শ্রমিক।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, একতা বাজার সংলগ্ন বদ্ধ জলাশয়টি শত বছরের পুরনো। অনেক আগে থেকে আমরা দেখছি। এটি জনসাধারণের ব্যবহার্য ও মাছ চাষ হতো। জলাশয়টি ভরাট হয়ে গেলে এলাকার লোকজন ব্যবহারের পানি নিয়ে সমস্যায় পড়বে। আমরা দখলবাজদের হাত থেকে বদ্ধ জলাশয়টি রক্ষার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। তারা আরো জানায়, ইতিপূর্বে ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি স্থানীয় সামাজিক কবরস্থানের জমি জবর দখল ও ছরাখাল দখল করে পেট্রোল পাম্পের সীমানা দেয়াল নির্মান করে নানা আলোচনা সমালোচনা জন্ম দিয়েছিলো।
স্থানীয় আবদুল হক নামে এক বৃদ্ধ বলেন, এই জলাশয় আমরা ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি। এখানে সারা বছর পানি থাকে। এটি থাকায় স্থানীয় লোকজন পানির সমস্যা থেকে মুক্ত রয়েছে। জলাশয়টি দখল ও দুষণ থেকে মুক্ত না হলে পরিবেশের পাশাপাশি এলাকার দরিদ্র লোকজনের পানির সমস্যা আরো প্রকট হবে। তিনি আরো বলেন, এই জলাশয়ের পাশে একটি হাই স্কুল ও সড়কের পাশে লাগোয়া অসংখ্য দোকানপাট রয়েছে। স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও এ জলাশয়ের পানি ব্যবহার করে থাকেন।
বদ্ধ জলাশয় ভরাট প্রসংগে প্রভাবশালী হাশেম উদ্দিন বলেন, ওই জলাশয়ের বৈধ মালিকদের কাছ থেকে আমি জমি ক্রয় করেছি। তাই জলাশয়ের মাঝখানে মাটি দিয়ে পাড় বেঁধে সামনের অংশে মার্কেট নির্মান করছি।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহবুব ইসলাম বলেন, জলাশয় ভরাট করা পরিবেশ আইনের ৬ উপধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।