বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখা সাবেক চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদল নেতা, চট্টগ্রাম আইন কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আইন কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রদলের প্যানেল থেকে সাবেক ভিপি প্রার্থী বাঁশখালীর সরলের বাসিন্দা মোঃ সালাউদ্দীন কাদের মানিককে ছাত্র-জনতার উপর হামলার অভিযোগে উল্টো মামলায় জড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিকল্পিতভাবে চট্টগ্রাম শহরে তাকে দুটি মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সাবেক ছাত্রদল নেতা ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী সালাউদ্দীন মানিককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ঘটনায় বাঁশখালীতে এবার বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
পারিবারিক বিরোধের জের ধরে বাদীকে ম্যানেজ করে সালাহউদ্দীন মানিককে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সালাহউদ্দিন মানিক।
জানা গেছে, সাবেক চট্রগ্রাম মহানগর ছাত্রদল নেতা, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বশরীরে ভূমিকা রাখা মোঃ সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী মানিকের সাথে বাঁশখালীর গ্রামের বাড়িতে কতিপয় ব্যক্তির সাথে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। পারিবারিক বিরোধের জের ধরে তাকে চট্টগ্রামে মহানগরে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত এবং আহতদের মামলায় ফাঁসানো হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নগরীর পাঁচলাইশ মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলার বাদী ভোলা জেলার উদয়পুর রাস্তার মাথা গ্রামের বোরহান উদ্দীন উপজেলার শফিকুর রহমানের ছেলে মিনহাজুর রহমান। বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরের ২নং গেইট আল ফালাহ গলির বাসিন্দা মিনহাজুর রহমানের দাযের করা ওই মামলায় সালাহউদ্দীন মানিককে ২৩ নং আসামি করা হয়েছে।
তাছাড়া চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার পলোয়ান পাড়া এলাকার সামশুল হকের পুত্র মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন বাদী হয়ে ১৭ সেপ্টম্বর একটি মামলা করেন। সেখানেও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী মানিককে ১৬নং আসামি করা হয়। চট্টগ্রাম চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলাটি করা হয়।
ছাত্রদলের সাবেক এই নেতাকে মামলায় জড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে সিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী সালাহউদ্দিন মানিক।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সাবেক মহানগর ছাত্রদল নেতা মোঃ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী মানিক বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মাঠে ময়দানে সক্রিয়ভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে একাধিকবার গ্রেফতার এবং একাধিক মামলা মোকদ্দমার শিকার হন। সর্বশেষ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনি সরাসরি অংশ গ্রহণ এবং সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। কিন্তু জুলাই বিপ্লবের সাফল্যের পর কুচক্রী মহল কৌশলে ব্যক্তিগত বিরোধকে কাজে লাগিয়ে সালাহউদ্দিন মানিককেও আসামি করে দেন। জড়িয়ে দেন মিথ্যা মামলায়। এনিয়ে বাঁশখালীতে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
মিথ্যা মামলার শিকার মোঃ সালাদ্দীন কাদের চৌধুরী মানিক জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত এবং দলের দুঃসময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করায় আওয়ামী স্বৈরাচারীর বিভিন্ন মামলা-হামলার স্বীকার হয়েছি। দুঃখজনক বিষয় হলো আমার সাথে গ্রামে পারিবারিক জায়গা জমি নিয়ে কিছু মানুষের বিরোধ রয়েছে। এনিয়ে বিরোধী পক্ষের সাথে আমার মামলা মোকদ্দমাও রয়েছে। এরাই কৌশলে আমাকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলাগুলোতে জড়িয়ে দিয়েছে। এর আগেও তারা আমাকে ক্ষমতায় অপব্যবহার করে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে। গ্রেফতার করে নির্যাতন করেছে। এখন সরকার পরিবর্তন হলেও সেই জালিম চক্র খোলস পাল্টে আমাকে মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে হয়রানি করছে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বলেন, ব্যক্তিগত বিরোধের কারনে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে যদি বিএনপির কোন নেতা কর্মীর ইন্দনে দলীয় কোন নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে প্রমান পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিএনপি নেতা কর্মীরা বিগত প্রায় দেড় যুগ ধরে মামলা হামলা জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এ সময়ে এসেও যদি মিথ্যা মামলার শিকার হয় সেটা মেনে নেওয়া হবে না।
পাঁচলাইশ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সোলায়মান জানান, ঘটনায় জড়িত নয় এরকম কোন ব্যাক্তির নাম মামলায় থাকলে তদন্তে যদি প্রমাণিত না হয়, তাহলে ওই আসামির নাম বাদ যাবে। নিরীহ কোন ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টি মাথায় রেখে পুলিশ তদন্ত কাজ করছে।