ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

জাতীয় পার্টি বৈষম্যের শিকার: জি এম কাদের

সালেহ্ বিপ্লব, ঢাকা | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৬:১৩:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সভায় সভাপতিত্ব করেন জি এম কাদের: প্রেস উইং

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টি সর্বোতভাবে সমর্থন দিয়ে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলো। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেয়ার কারণে আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে রংপুরে মামলা হয়েছে পার্টির পদ পদবী উল্লেখ করে।  বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েও আমরা আজ বৈষম্যেও শিকার হচ্ছি। 

তিনি বলেন, ১ জুলাই ছাত্ররা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করলে, আমি ৩ জুলাই সংসদে তখনকার প্রধানমন্ত্রীর সামনে ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বক্তৃতা করেছি। যখন ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে আটক করা হলো, আমরা তাদের মুক্তি দাবি করেছি। ছাত্র আন্দোলনে যখন গুলি চালানো হলো, আমরা এর প্রতিবাদ করেছি। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেছি আমরা। রাজনীতিবিদদের মধ্যে সবার আগে রংপুরে গিয়ে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছি আমি। শহীদ আবু সাঈদের শোকার্ত বাবা-মাকে সান্তনা দিয়েছি। 

জি এম কাদের বলেন, দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ছাত্র আন্দোলনের সাফল্য নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। একটি চক্র জাতীয় পার্টিকে ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষের দল হিসেবে চিহ্নিত করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যে ছাত্রদের আন্দোলনে আমরা সমর্থন দিয়েছি, আমাদের নেতা-কর্মীরা অংশ নিয়ে হামলা-মামলার শিকার হয়ে জেল খেটেছে। সেই আন্দোলনের হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীদের আসামী করা হচ্ছে। এই অন্যায় মেনে নেয়া হবে না। আমরা রাজপথে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ করবো। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সভায় সভাপতির বক্তৃতায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের নামে মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে রংপুর থেকে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। রংপুরের মানুষ রাস্তায় জীবনবাজী রেখে আন্দোলন করে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ফাঁসি থেকে রক্ষা করেছে। আমার জন্যও তারা রাজপথে লড়াই শুরু করেছে। আমরা তাদের ঋণ কখনোই শোধ করতে পারবো না। আমরা অপরাধ করিনি, আমাদের অপরাধী করার অপচেষ্টা চলছে। আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে আমাদের ব্র্যান্ডিং করার অপচেষ্টা চলছে। 

তিনি বলেন, আমি গণমাধ্যমসহ সবার সামনে পরিস্কার করে বলেছি, ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমরা যেতে চাইনি, আমাদের জোর করে নির্বাচনে নেয়া হয়েছে। ২০১৪ ও ২০২৪ সালে নির্বাচনে যেতে বাধ্য হয়েছে জাতীয় পার্টি। আর ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ দেশের সকল রাজনৈতিক দলই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো। আবার, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও উপজেলা পরিষদ ও মেয়র নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো বিএনপি। আওয়ামী লীগের নির্বাচন ব্যবস্থায় অংশ নেয়ার কারণে কাউকে স্বৈরাচারের দোসর বলা উচিত নয়। কারণ, আওয়ামী লীগের নির্বাচন ব্যবস্থায় বিএনপিসহ সকল দলই অংশ নিয়েছিলো। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্যরা চার বছর সংসদে ভুমিকা রেখেছেন। আমরা মন্ত্রী বা এমপি হবার জন্য রাজনীতি করি না। জনগণের পক্ষে কাজ করাই আমাদের রাজনীতির মুখ্য উদ্দেশ্য। সংসদে ও সংসদের বাইরে আওয়ামী লীগের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করেছি আমি।    

গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন,  জাতীয় পার্টির একটি উজ্জল ভবিষ্যত আছে। তিনি অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রেসিডিয়াম সভায় উপস্থিত ছিলেন - সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু, সৈয়দ মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, মীর আব্দুস সবুর আসুদ,হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন,এ টি ইউ তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, নাসরিন জাহান রতনা, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী,এড মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মোঃ মিজানুর রহমান, সৈয়দ দিদার বখত, নাজমা আক্তার, আলমগীর সিকদার লোটন, মোঃ এমরান হোসেন মিয়া, মেজর অবঃ রানা মোহাম্মদ সোহেল, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, জহিরুল আলম রুবেল, শেরীফা কাদের, মনিরুল ইসলাম মিলন, মাসরুর মওলা, মোঃ জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, মোঃ আরিফুর রহমান খান, মোঃ আশরাফুজ্জামান আশু, আমিনুল ইসলাম ঝন্টু ও এস এম ইয়াসির।