ঝিনাইদহ শহরের ধোপাঘাটার গোবিন্দপুর থেকে অমিত সাহা (৩৫) নামে এক যুবকের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের ধোপাঘাটা পুরোনো ব্রিজ এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত যুবক তিন দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী।
অমিত সাহা মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে ঝিনাইদহ শহরের কচাতলা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সকালে ধোপাঘাটা পুরাতন ব্রিজের সামনে টার্মিনাল সড়কের এলাকার রাস্তার পাশে বস্তাবন্দি লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। পরে পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, মুখে পলিথিন মোড়ানো ও বস্তাবন্দি ছিল মরদেহটি। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা অমিত সাহা নামের ওই যুবককে অন্য কোথাও হত্যা করে ঘটনাস্থলে লাশ ফেলে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
তিনি আরও জানান, লাশটি ছিল প্লাস্টিকের বস্তাবন্দি। খুলে দেখা যায় পঁচে গেছে। লাশের গায়ে পোকা বিনবিন করছে। দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। তাকে অন্য কোথাও হত্যা করে এখানে ফেলা হয়েছে। আমাদের ক্রাইমসিন এলাকা পরিদর্শন করেছে।
নিহতের স্ত্রী তৃষা নন্দী বলেন, ‘আমার স্বামী অমিত সাহা ডিসি অফিসসংলগ্ন এলাকায় একটা খাবারের ক্যানটিনের ব্যবসা করত। সেই সূত্রে সদর উপজেলার হাটগোপালপুর এলাকার রাজনুর হোসেনের সঙ্গে পরিচয় হয় এবং আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া তৈরি হয়। এরই মধ্যে অমিতের ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে বেশ কিছু টাকা দেনা হয়ে যায়। এটা শোধ করতে পারছিল না সে। কিন্তু রাজনুর তার দেনার টাকা পরিশোধের আশ্বাস দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর মধ্যে রাজনু আমাকে নানাভাবে প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকে। ফোনে মেসেজও দিত। এটা আমার স্বামীকে জানালে সে ব্যবসা ছেড়ে গ্রামে চলে যাওয়ার কথা জানায়। তখন রাজনু আপাতত আমাদের সমস্ত খরচ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গ্রামে যেতে নিষেধ করে।
তৃষা নন্দী আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে ৩১ আগস্ট বিকেলের দিকে রাজনু আমাদের বাসায় এসে অমিতকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাকে খুঁজে না পেয়ে থানায় একটি অভিযোগ দেই। আজকে সকালে তাঁর লাশ পেলাম আমরা। আমি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ ঘটনায় অভিযুক্ত রাজনুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।