ঠাকুরগাঁও রানীশংকৈলের সাপ্তাহিক দুটি বড় হাট নেকমরদ ও রানীশংকৈলে অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছে ভূক্তভোগীরা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে উপজেলা গেটের সামনে প্রতিবাদ স্বরুপ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচী পালন করেছে তারা
পরে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারক লিপি দেয়া হয়েছে।
মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা ভাইস চেযারম্যান সোহেল রানা, স্কুল শিক্ষক খায়রুল বাশার, জিল্লুর রহমান প্রমুখ।
মানব বন্ধনে ভূক্তভোগী খায়রুল বাসার বলেন, আমি একজন স্কুল শিক্ষক। গত রোববার গরু কিনতে নেকমরদ বাজারে গেলে আমি ইজারাদার ও তাদের লোকজনের কাছে চরম অপমানিত হই। কারন তারা সরকারের দেয়া নির্ধারিত টোলের চেয়ে বেশি টোল নিচ্ছিলো। আর এ অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদ করায় আমাকে যাতা ভাষায় গালাগাল শুনতে হয়েছে। আমি এর সুরাহা চাই।
আরেক ভূক্তভূগী জিল্লুর রহমান বলেন, আমি সরকারের অধীনে চাকরি করি৷ সরকারের নিয়ম কানুন মেনে চলি। কিন্তু কাতিহার বাজারে নাতির আকিকার জন্য ছাগল কিনতে গেলে আমাকে ন্যাক্কার জনক পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। তারা সরকারের নির্ধারিত ৯০ টাকার লেখাইয়ের বদলে ২০০ টাকা আদায় করছে৷ আমি এর কারন জানতে চাইলে তারা বলে নিলে নেন না নিলে ছাগল রেখে চলে যান।
কিসমত আলী একজন গরীব দিনমজুর৷ একটি ছাগল বিক্রি করতে এসেছিলেন নেকমরদ হাটে। বলেন, আমাদের জিম্মি করে রাখছে হাট ইজারাদাররা। যারা বিক্রি করছে এবং যারা কিনছে দু'পক্ষের থেকেই অতিরিক্তহারে টাকা নিচ্ছে। সব কিছুকেই বেশি টোল নিচ্ছে ইজারাদার। আমার কাছে মনে হয়েছে এগুলো দিনে দুপুরে ডাকাতি করা হচ্ছে।
এই আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে রানীশংকৈল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধিরা এর দায় এড়াতে পারিনা। জনগণ তাদের সঠিক পন্থা অবলম্বণ করেও যদি হেনস্তার শিকার হন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হন তাহলে এর জবাব দিতে হবে৷ অভিযোগ পাওয়ার পর আমি নিজে হাটদুটি পরিদর্শন করেছি এবং আমার নিজ চোখে এ লুটপাট আমি দেখেছি৷ আমি বলতে চাই উপজেলা প্রশাসন শুধু জরিমানা না করে যাতে আর কখনো হাটগুলোতে অতিরিক্ত টোল না তুলতে পারে সেদিকে সোচ্চার হন। প্রতি সপ্তাহে ৭-১০ লাখ টাকা আয় করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ইজারাদাররা অভ্যস্ত হয়েগেছে। অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধ না হলে জনগণ আরও দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।
এ বিষয়ে জানতে কাতিহার হাটের ইজারাদার ফোন রিসিভ করেন নি। তবে নেকমরদ হাটের ইজারাদার আব্দুল কাদের অতিরিক্ত টোল নেয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন গোটা জেলায় যেমন বেশি নিচ্ছে আমিও তেমন বেশি নিচ্ছি।
রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুলকার নাইন কবির স্টীভ বলেন, হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পেলেই জরিমানা করেছি। এ বছর প্রথম হাট চলেছে৷ এরপর থেকে অতিরিক্ত টোল নিলে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভূক্তভোগীদের দেয়া স্মরকলিপি পেয়েছে জানিয়ে ইউএনও বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট তা পাঠানো হবে।