জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড ফরিদ আহমেদের পদত্যাগসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনে বিভাগের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো: অতিদ্রুত ছাত্রসংসদ চালু করে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে, সাম্প্রতিক অরাজক পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছ তা অতিদ্রুত পুষিয়ে নিতে হবে এবং বিভাগের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা সঠিক সময়ে নিতে হবে।
সমাবেশে বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাসেল আকন্দের সঞ্চালনায় বিভাগের ৫০ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রুবিনা জাহান তিথি বলেন, যেখানে চিন্তা ভাবনার সুস্থতা নেই সেখানে দর্শন পড়ারও যৌক্তিকতা নেই। অধ্যাপক ফরিদ যে দর্শন বোঝেন না সেটা আমরা যারা তার ক্লাস করেছি তারা সবাই জানি। তিনি যে মনুষ্যত্বহীন নৈতিকতাহীন সেটাও আজ এখন আমাদের জানা হলো। যেখানে একজন শিক্ষকের উচিত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো সেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের মানুষ বলেই মনে করেন নি উলটা তিনি আরও পুলিশী হামলাকে উষ্কে দিয়েছেন। এ ধরনের শিক্ষকের কাছে থেকে আমাদের শেখার কিছু নাই। আমরা চাই তিনি দ্রুত জনসম্মুখে এসে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইবেন এবং দ্রুত নিজ পদ থেকে ইস্তফা প্রদান করবেন।
বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো রিফাত বলেন, যেখানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব শিক্ষকের সেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের আক্রমণ কে উষ্কে দিয়েছেন। তিনি কখনোই আমাদের সঠিকভাববে ক্লাস-পরীক্ষা আয়োজন করতে পারেন নি। তিনি বিভাগের শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কখনো কোনো কাজ করেন নি। অপরদিকে তিনি শিক্ষার্থীদের উপর আওয়ামী-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের আক্রমণকে সমর্থন দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের তিনি রাজাকার বলেছেন এবং তাদের উপর পুলিশী আক্রমণকে সমর্থন করেছেন। এমন শিক্ষকের কাছে আমরা কেউ ক্লাস করতে চাই না। আমরা তাকে বিভাগ থেকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করছি এবং দ্রুত তার পদত্যাগকে কার্যকর করার দাবি জানাই।
এসময় বিভাগের ৪৭ বিভাগের শিক্ষার্থী সামিহা তাসনিম বলেন, ১৫ জুলাই রাতে ও ১৬ জুলাই ভোর রাতে আওয়ামী সরকারের মদদপুষ্ট ছাত্রলীগ ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে শিক্ষার্থী উপর অতর্কিত ও নারকীয় আক্রমণ চালায় এতে আহত হয় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। এই নারকীয় আক্রমণের পর যখন সকল শিক্ষকরা আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তখনও তিনি আমাদের বিরোধিতা করেন আমাদের রাজাকার আখ্যা দেন। এমনকি ১৭ জুলাই তারিখে যখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের উপর গুলি বর্ষণ করে তখন তিনি বাধা না দিয়ে উলটা শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালায় যেতে বলেন। এমন নীতি বিবর্জিত কাউকে আমরা আমাদের বিভাগে চাই না। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দিচ্ছি তাকে প্রকাশ্যে এসে ক্ষমা চাইতে হবে এবং দ্রুত নিজ পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে শেষে শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. মুনির হোসেন তালুকদারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে।