রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সেচের পানির জন্য দুই কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় গভীর নলকূপের অপারেটর শাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার (০২ এপ্রিল) রাত ১টার দিকে উপজেলার চব্বিশনগর কদম শহর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশ।
শাখাওয়াত হোসেন উপজেলার ইশ্বরীপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি।
গোদাগাড়ী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, পলাতক থাকা অবস্থায় শনিবার দিবাগত রাতে চব্বিশনগর কদম শহর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে ফিরছিলেন। গোপন সংবাদ পেয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার দুপুরের দিকে তাকে আদালতে তোলা হবে। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার তিন দিনের রিমান্ড চাওয়ার কথাও জানান ওসি।
গত ২৩ মার্চ বিষপান করেন জেলার গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়নের নবাই বটতলা নিমঘুটু গ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কৃষক অভিনাথ মার্ডি ও রবি মার্ডি। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। তাদের হাসপাতালে না নিয়ে বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে আসেন বিএমডিএর গভীর নলকূপ অপারেটর শাখাওয়াত হোসেন।
বাড়ি ফিরে ওই দিন রাতেই মারা যান অভিনাথ। স্বজনরা ওই রাতেই রবি মার্ডিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ মার্চ রাতে মারা যান রবিও। এই ঘটনায় ২৫ মার্চ রাতে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে অভিনাথ মার্ডির স্ত্রী রোজিনা হেমব্রম বাদি হয়ে মামলা করেন। রবি মার্ডির মৃত্যুর পর আত্মহত্যার প্ররোচনায় আরেকটি মামলা হয়। দুটি মামলাতেই একমাত্র আসামি করা হয় গভীর নলকূপ অপারেটর শাখাওয়াত হোসেনকে।
মৃত অভিনাথের স্ত্রীর দাবি, গভীর নলকূপের অপারেটর পানি না দেওয়ায় তার স্বামী বিষপান করেন। আর রবি মার্ডির মা জানিয়েছেন, পানি সেচ দেওয়া নিয়ে কোনো সমস্যার কথা তার জানা নেই।
তবে ওই গভীর নলকূপের অধীনে বোরো চাষ করা অন্য কৃষকরা বলছেন, পানির সংকট ছিল না। আর গভীর নলকূপের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিএমডিএ জানিয়েছে, পানি সেচের জন্য নিজস্ব প্রি-পেইড কার্ডই ছিল না আত্মহননকারী দুই কৃষকের। পুলিশ বলছে, ভিসেরা প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত রহস্যজট খুলছে না। যদিও আলাদা তদন্ত কমিটি করে ঘটনা খতিয়ে দেখছে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বিএমডিএ।