মঙ্গলবার ২৭ ডিসেম্বর সকালে ঘুম থেকে উঠেই আচমকা খবরটি শুনতে হলো। প্রথম খবরটি পেলাম সুনামগঞ্জের সাংবাদিক কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ ভাইয়ের মাধ্যমে। দ্বিতীয়বার খবরটি পেলাম জগন্নাথপুরের আওয়ামী লীগ নেতা রাসেল আহমদ চৌধুরীর মাধ্যমে। জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আকমল হোসেন আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার দিনগত গভীর রাতে তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে। চিরন্তন সত্যকে মেনে নিতে হবে। তাই বিশ্বাস করতে হলো। তাড়াহুরো করে বের হলাম। সিলেট শহরের ধোপাদিঘির পারে রয়েছে আকমল ভাইয়ের বাড়ি। সাংবাদিক মনজুরুল আমিন দোয়েল ও আমি সেখানে গিয়ে দেখলাম বাড়ির আঙ্গিনায় অনেক লোকজন। আকমল ভাইয়ের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে কাজিরবাজার মাদরাসায়। সেখানে গোসল দেয়া হবে। পরে রাখা হবে হিমাগারে। আকমল ভাইয়ের সন্তানরা ২৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবারের মধ্যে দেশে আসবেন। পরে ওইদিন সকাল ৯ টায় সিলেট নগরীর নাইওরপুল জামে মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। একইদিন বেলা আড়াইটায় নিজ বাড়ি শ্রীরামসি স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হবে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত হিমাগারে থাকবে লাশ। কাজিরবাজার মাদরাসায় গিয়ে দেখলাম গোসল শেষ হয়েছে। কাপনে মোড়ানো হয়েছে আকমল ভাইয়ের মরদেহ। মুখ দেখলাম। উজ্জল চেহারা। যেন ঘুমিয়ে আছেন। আকমল হোসেন সম্প্রতি অনুষ্ঠিতব্য জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচেন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। গত ১ ডিসেম্বর শপথ গ্রহন করেছিলেন। শপথ গ্রহন করার ২৬ দিনের মাথায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এই নির্বাচনের কয়েকদিনের মাথায় জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব লাভ করেন। উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেছিলাম। ফোন রিসিভ করে অনেকটা উচ্ছ্বাসের সঙ্গে কথা বলছিলেন। জানতে চেয়েছিলাম পুরো উপজেলা নিয়ে কী ভাবছেন। জানিয়েছিলেন একটি আদর্শ উপজেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেন জগন্নাথপুরকে। এজন্য অনেক কথা আছে। আওয়ামী লীগের সম্মেলন ২-৩ দিনের মধ্যে। সম্মেলনের পর সরাসরি বসে পরিকল্পনার কথা জানাবেন। আকমল ভাইয়ের সাথে এই ছিল শেষ কথা। চারদলীয় জোট সরকারের সময় প্রথম দেখা হয়েছিল আকমল ভাইয়ের সাথে। সেসময় তিনি জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদে বসে দীর্ঘসময় কথা হয়েছিল। সেদিন বুঝতে পেরেছিলাম পরিচ্ছন্নতার কারণে এলাকায় আকমল ভাইয়ের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। এর পর অনেকবার দেখা হয়েছে। লংড্রাইভের পথে দেখেছি আকমল ভাইয়ের ব্যক্তিত্ব। আকমল ভালো থাকবেন-এই কামনা করছি। এদিকে তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির ইমনসহ সুনামগঞ্জ জেলা ও জগন্নাথপুর উপজেলার বিভিন্নস্তরের নেতৃবৃন্দ।