ঢাকা, শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নারী চিকিৎসক মৌমিতাকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে জাবিতে মোমবাতি প্রজ্বলন

জাবি প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : শনিবার ১৭ অগাস্ট ২০২৪ ০৫:০৪:০০ অপরাহ্ন | শিক্ষা

কলকাতায় নারী চিকিৎসক মৌমিতা দেবনাথকে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে গণসংহতি ও মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

 

১৬ আগস্ট (শুক্রবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপরে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এক সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মোহাম্মদ মেশকাত চৌধুরী বলেন, বৈষম্য, অবিচার পৃথিবীর যেখানেই হোক আমাদের রাজপথে দাঁড়াতে হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, পৃথিবীর যে প্রান্তেই অন্যায়, অবিচার, ফ্যাসিজম, সৈরাচার থাকবে আমরা সে দেশের মানুষের ন্যায় সঙ্গত আন্দোলন সংগ্রামের সাথে সংহতি জানিয়ে রাজপথে নেমে আসতে হবে। এই অভ্যাস যতদিন পর্যন্ত আমরা না করতে পারব, ততদিন পৃথিবী থেকে অন্যায় অবিচার যাবে না।

 

এ সময় জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্ট্যাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা রিমু বলেন, ‘ভারতে এক নারী চিকিৎসককে মেডিকেলের দালাল, কলিগের সহযোগিতায় ধর্ষণ এবং পরবর্তীতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এরই প্রতিবাদে সমস্ত ভারতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে প্রতিবাদী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে আমরা তাদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আজকে এখানে উপস্থিত হয়েছি। নারীদের নিরাপত্তার প্রশ্নে তিনি বলেন, নারীদের যদি নিরাপত্তা থাকতো, তবে নিজস্ব কর্মসংস্থানে এভাবে মৌমিতা দেবনাথ গণধর্ষণ এবং তাকে হত্যা করা হতো না। আমরা অতিদ্রুত এই হত্যাকারীদের যেন বিচারের আওতায় আনা হয় এই আশা ব্যক্ত করছি।

 

মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচিতে শেষে সংহতি সমাবেশে অধ্যাপক মাফরুহি সাত্তার বলেন, ‘একজন মানুষ হিসেবে বলতে চাই, কলকাতায় ঘটে যাওয়া ঘটনাটি একটি জাতির জন্য ন্যাক্কারজনক। আমরা এই গণসংহতি থেকে বিশ্ববাসীকে এটা নিশ্চিত করতে চাই যে, আমরা বাঙালিরা যে রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলছি তার অংশ হিসেবে পৃথিবীর যেকোন জায়গায় ঘটে যাওয়া সকল ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা রুখে দাঁড়াবো। এছাড়াও পূর্বের সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ন্যায় আমরা জাহাঙ্গীরনগর থেকে সারা দেশে এই প্রতিবাদের জোরালো আওয়াজ ছড়িয়ে দিতে চাই।’

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘যে হাসপাতালে আমরা মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসা নিতে যাই, সেখানে কীভাবে মানুষরূপী কিছু পশু একজন চিকিৎসককে এমন পাশবিক নির্যাতনের পর তাকে হত্যা করতে পারে? বাংলাদেশে আমরা যখন কোটা সংস্কার ও স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলাম তখন ওপারের মানুষ আমাদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে আমাদের পাশে থেকেছে। রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের মতো তারাও পুলিশ কর্তৃক নির্যাতিত হয়েছে। আমরা মৌমিতা দেবনাথের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি, যাতে অন্য কোনো মৌমিতা দেবনাথের মতো অন্য কাউকে কখনও নিপীড়নের শিকার না হতে হয়।’