নাশকতা ও চাঁদাবাজি মামলায় সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ (৫৭) সহ ৫ ভূমিদস্যুকে গ্রেপ্তার করেছে দেবহাটা থানা পুলিশ। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকাল পৌনে ৬টার দিকে দেবহাটা উপজেলার খলিশাখালি এলাকা থেকে পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারকৃত রঘুনাথ খাঁ দীপ্ত টিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি। তিনি কালীগঞ্জ বিষ্ণুপুর গ্রামের মৃত মদন মোহন খাঁ’র ছেলে এবং সাতক্ষীরা সদরের কাটিয়া আনন্দপাড়ার বাসিন্দা। রঘুনাথ খাঁ ছাড়াও গ্রেপ্তারকৃত অপর ভূমিদস্যুরা হলেন, দেবহাটার ঢেপুখালী গ্রামের মৃত ফজর আলী গাজীর ছেলে রেজাউল করিম (৬৩), চালতেতলা গ্রামের নওশের হাওলাদারের ছেলে লুৎফর রহমান (৪৫), কালীগঞ্জের ইন্দ্রনগর গ্রামের মৃত রহিম বক্স পাড়ের ছেলে রেজাউল (৪৮) এবং দেবহাটার বেজোরআটি গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মাসুদ রানা (২৬)।
দেবহাটা থানার ওসি শেখ ওবায়দুল্যাহ এক প্রেসনোটে জানিয়েছেন, বিগত প্রায় দুই বছর ধরে দেবহাটার খলিশাখালি জনপদে ব্যাক্তি মালিকানাধীন ১৩২০ বিঘা জমি জবরদখলে ভূমিদস্যুদের নের্তৃত্ব ও ইন্ধন জুগিয়ে আসছিলেন রঘুনাথ খাঁ। তাছাড়া সম্প্রতি দলবল নিয়ে ওই জমির মালিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন তিনি।
শনিবার বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খলিশাখালির পাশ^বর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে নাশকতার চেষ্টাকালে রঘুনাথ খাঁ, রেজাউল করিম ও লুৎফরকে কয়েকটি ককটেলসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় বিষ্ফোরিত ককটেলের অংশ বিশেষ, লাঠিশোঠা, গাছের গুড়িসহ নাশকতা কাজে ব্যবহৃত অন্যান্য মালামালও জব্দ করে পুলিশ। পরে রঘুনাথ খাঁ সহ গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাদের অপর দুই সহযোগী রেজাউল ও মাসুদ রানাকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নাশকতা কান্ডের ঘটনায় রঘুনাথ খাঁসহ গ্রেপ্তার পাঁচজন ছাড়াও ১৫ জন পলাতক ও ২০/২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে ১৯৭৪ সালের দি স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট এর ১৫(৩)/২৫-ডি তৎসহ ১৯০৮ সালের উপাদানাবলি আইনের ৩/৪/৬ ধারায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় খলিশাখালির মৎস্য ঘের মালিক কাজী গোলাম ওয়ারেশ’র ছেলে সুরুজ ওয়ারেশ বাদী হয়ে রঘুনাথ খাঁ, খলিশাখালির আনারুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজনকে আসামী করে পৃথক আরেকটি মামলা (নং-০৯) দায়ের করেছেন।
প্রেসনোটে ওসি ওবায়দুল্যাহ আরও বলেছেন, সাংবাদিকতার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় নানা অপকর্মে জড়িয়ে ছিলেন রঘুনাথ খাঁ। তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজী, প্রতারনা ও দ্রুত বিচার আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। ২০০৭ সালে তালা উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী অফিসারের ড্রাইভার ইমান আলীর থেকে চাঁদা আদায়কালে যৌথবাহিনীর হাতে আটক হন তিনি। তাছাড়া ২০১৩-১৪ সালে জেলাব্যাপী বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের নাশকতা কর্মকান্ডে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে তার সম্পৃক্ততা ছিল। এসব ঘটনা উল্লেখ করে জেলার প্রায় প্রত্যেকটি থানায় তার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরীও রয়েছে। এমনকি ২০০৭ সালে আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নের অপরাধে দ্রুত বিচার আইনে রঘুনাথ খাঁ ৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ডেও দন্ডিত হয়েছিলেন রঘুনাথ খাঁ। গ্রেপ্তার পরবর্তী রবিবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওসি।