হাওরের জমিতে কাটা ধান প্রথমে নৌকায় করে এবং পরে গাড়িতে (পাওয়ার টিলার) করে আনতে হয় বাড়িতে। পাওয়ার টিলারে ধান ওঠানোকে কেন্দ্র করে দু'দল গ্রামবাসীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে পঞ্চাশোর্ধ নায়েব উল্লাহ নিহত এবং মহিলা-শিশুসহ আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। বর্বরোচিত এই ঘটনা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা এলাকার।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দুপুর থেকে থেমে থেমে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়ন এলাকার লঙ্গন নদীর পূর্বপাড়ে শ্রীঘর এবং আশুরাইলের মধ্যবর্তী স্থানে ঘটে এই সংঘর্ষের ঘটনা। নিহত নায়েব উল্লাহ্ শ্রীঘর গ্রামের শানু উল্লাহর পুত্র। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি আহতদের নাম-পরিচয়।
নিহতের পরিবার, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এলাকাবাসী এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল গ্রামের জালাল মিয়া হাওর থেকে ধান কেটে নৌকায় করে অনিতপুরের চরে নিয়ে আসে। বাড়িতে ধান নিতে জালাল শ্রীঘর গ্রামের জুনাইদ মিয়ার একটি পাওয়ার টিলার (ছোট ট্রাক্টর) ৫০০ টাকায় ভাড়া করে। তবে কিছুক্ষণ পর হঠাৎই জুনাইদ তার পাওয়ার টিলার নিয়ে ধান আনতে যাবে না বলে জানিয়ে দেয়। এ নিয়ে দু'জনের মধ্যে তর্কবির্তক হয়। এরই এক পর্যায়ে দু'জনের মধ্যে ঘটে হাতাহাতির ঘটনা। ধানের মালিক জালাল এবং পাওয়ার টিলার চালক জুনাইদের মধ্যেকার তর্কাতর্কি-হাতাহাতির খবর দু'জনের গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। দু'পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে পঞ্চাশোর্ধ নায়েব উল্লাহ্ নিহতসহ উভয় পক্ষের মহিলা-শিশুসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়। পরে খবর পেয়ে নাসিরনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতের পর ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে। সংঘর্ষে আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
নাসিরনগর থানার পরিদশর্ক (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, হাওর থেকে ধানের আঁটি বাড়িতে নেওয়া নিয়ে দু'পক্ষের সংর্ঘষে একজন নিহত হয়েছে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।' (ছবি : মেইলে সংযুক্ত)
#