ঢাকা, শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নির্বাচন বয়কট, সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে শার্শার ১০ ইউনিয়নে নির্বাচন সম্পন্ন

বেনাপোল প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : রবিবার ২৮ নভেম্বর ২০২১ ০৪:২৬:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

নির্বাচন বয়কট, সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও কয়েকটি স্থানে উৎসকমূখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে যশোরের শার্শা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহন শেষ হয়েছে। সকাল ৮ টা থেকে ভোট গ্রহন শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে। পুটখালি ইউনিয়নের দৌলতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে দেখা গেছে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট গ্রহন চলছে। পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি অনেক বেশী। ইউনিয়নের শিকড়ী মাদ্রাসা কেন্দ্রে চারজন আহত হয়।

কায়বা ইউনিয়নের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র  ঘুরে দেখার সময় বিদ্রোহী প্রার্থী আলতাফ হোসেনের ছেলে অভিযোগ করে বলেন, কায়বার প্রতিটি ভোট কেন্দ্র নৌকার লোকজন ভোট কাটাকাটি করছেন। প্রশাসন তাদেরকে সহযোগিতা করছেন। 

এ ব্যাপারে নৌকার প্রার্থী হাসান ফিরোজ টিংকু জানান, কায়বার সকল  কেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট গ্রহন চলছে। নৌকার কোন লোকজন কায়বার কোন কেন্দ্রেই ভোট কাটাকাটি করছে না। যারা এধরনের অভিযোগ করছে তারা মিথ্যা বলছে। গোগার অগ্রভুলোট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের নৌকার পুলিং এজেন্ট শিউলি বেগম অভিযোগ করে বলেন, এ কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন জাল ভোট দিচ্ছেন। গোগা ইউনিয়নের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে নৌকার পোলিং এজেন্ট পাওয়া যায়নি। প্রশাসন তাদের সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন নৌকার প্রার্থী আব্দুর রশিদ।

বাগআঁচড়ার বসতপুর কেন্দ্রে নৌকার সমর্থক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের ৮ জন আহত হয়েছে। এ সময় প্রতিপক্ষ বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল খালেকের লোকজন তাদের ঘরবাড়ি ভাংচুর করে।

বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ইলিয়াছ কবির বকুল অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের আগের দিন রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্যাডাররা আমাকে নানা ভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি। পুলিশ আমার লোকজনকে মারপিট করছে। আমি বাসা থেকে বের হতে পারছি না। স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি জামায়াতের সহযোগীতায় ভোট কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট প্রয়োগ করছেন। তাদের সহযোগীতা করছেন পুলিশ। 

বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল খালেকের সমর্থকরা অবরুদ্ধ করে রাখায় নিজের ভোটটিও দিতে পারিনি বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন ওই প্রার্থী। প্রানের ভয়ে বাসায় অবরুদ্ধ হয়ে আছি।  ভোট কেন্দ্র থেকে তার পুলিং এজেন্টদের মারপিট করে বের করে দেয়া হচ্ছে। এসব কারনে তিনি এ নির্বাচন বয়কট করেছেন। তিনি আরও বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন আমার লোকজনের উপর হামলা করে ৪ জনকে গুরুতর জখম করেছে। 

ডিহি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে তালা প্রতীকের মেম্বার প্রার্থী তরিকুল ইসলাম তোতা ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ মোরগ প্রতীকের শহিদুল ইসলামের তিন সমর্থককে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শালকোনা প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসনা শারমিন মিথিসহ পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলাকারীদের ধাওয়া দেন। পরে পুলিশের সহযোগিতায় আহতদের শার্শার বুরুজবাগান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। একইসঙ্গে হামলার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে কটা খালেক নামে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করে। বাহদুর ইউনিয়নের ঘিবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুজন আহত হন। এছাড়া লক্ষণপুর, বাহাদুরপুর, ডিহি ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর সমর্থক জাল ভোট প্রয়োগ করেছে বলে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা জানান, সকাল থেকে শার্শায় শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট গ্রহন শেষ হয়েছে। কোথাও তেমন বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।