রেফারির শেষ বাঁশি বাজতেই ভোঁ দৌড়; ডাগআউট থেকে ফুটবলারদের সঙ্গে যোগ দিলেন সাপোর্ট স্টাফরা; শিরোপার উল্লাস বাংলাদেশের! বিপরীতৈ পিনপতন নীরবতা কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সের গ্যালারিতে। স্বপ্নভঙ্গের হতাশায় বিমূঢ় হাজার হাজার দর্শক। স্বাগতিক দর্শকদের নিরাশ করে মাঠের একপাশে চলছে লাল-সবুজের উৎসব।
সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে ৪-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। সাফ ফুটবলের এই ফরম্যাটের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে মিরাজুলের গোলে লিড নিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে মিরাজুল ও রাহুলের গোলে ৭০ মিনিটের দিকে ৩-০ গোলে এগিয়ে থাকে বাংলাদেশ। ৮০ মিনিটে নেপাল একটি গোল পরিশোধ করে।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষে রেফারি ১০ মিনিট ইনজুরি সময় দেন। নেপাল গোলের চেষ্টা করে উল্টো আরও এক গোল হজম করে। বাংলাদেশ জিতে যায় ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে।
এর আগে প্রথমার্ধের নির্ধারিত ৪৫ মিনিট শেষে রেফারি ২ মিনিট ইনজুরি সময় দেন। সেই ইনজুরি সময়ে বাংলাদেশ প্রথম লিড নেয়। বক্সের বাইরে বাংলাদেশি ফরোয়ার্ড মিরাজুল ইসলামকে ফাউল করে। রেফারি ফ্রি কিকের বাঁশি বাজান।
বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত শট নেন মিরাজুল। বাঁকানো শটে নেপালি গোলরক্ষক সম্পূর্ণ পরাস্ত হন। সাইড পোস্টে লেগে বল জালে জড়ায়। বাংলাদেশের গোলের সঙ্গে সঙ্গে আনফা কমপ্লেক্সের গ্যালারি নীরব হয়ে যায়।
পুরো স্টেডিয়ামজুড়ে ছিল নেপালের সমর্থন। ম্যাচের প্রথমার্ধে নেপালই বেশি প্রাধান্য বিস্তার করেছে। বল পজেশন ও আক্রমণে স্বাগতিকরা এগিয়ে ছিল। গোলের সুযোগও মিস করেছে কয়েকটি। বাংলাদেশ কাউন্টার অ্যাটাকে বেশ কয়েকবার আক্রমণ করলেও তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধের ৭ মিনিটে লিড দ্বিগুণ করে বাংলাদেশ। বাঁ প্রান্ত থেকে আক্রমণে ওঠে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। নেপালের বক্সে ফেলা ক্রস বাংলাদেশি ফরোয়ার্ড সতীর্থ মিরাজুলের উদ্দেশে পাঠান। পোস্টের সামনে ফাঁকায় দাঁড়ানো মিরাজুল হেডে বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি
দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর নেপাল স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারেনি। বাংলাদেশ আরও আধিপত্য নিয়ে খেলেছে। ম্যাচের ৭০ মিনিটে বাংলাদেশ ব্যবধান আরও বাড়ায়। রাব্বি হোসেন রাহুল জালের দেখা পেলেন এবার। এই গোলের যোগানদাতা জোড়া গোল স্কোরার মিরাজুল। মিরাজুলের বাড়ানো বলে বক্সে আড়াআড়ি শটে গোল করেন রাহুল। সুন্দর ফিনিশিং করেন সিনিয়র দলে ডাক পাওয়া এই ফরোয়ার্ড।
ম্যাচে অধিক সংখ্যক আক্রমণ করলেও নেপাল গোল পায় ৮০ মিনিটে। মাঝ মাঠ থেকে বাংলাদেশ বক্সে এসে পড়ে বল। গোলরক্ষক আসিফ ও ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করতে পারেননি। ফাঁকায় দাঁড়ানো নেপালী ফরোয়ার্ড হেডে জালে পাঠান।
ম্যাচের বাকি সময় নেপাল খেলায় ফেরার সর্বাত্মক চেষ্টা করে। কিন্তু আর গোল পায়নি তারা। উল্টো গোল ব্যবধান বাড়ে।
অনূর্ধ্ব-২০ পর্যায়ের খেলা হলেও এই ফাইনালে উত্তেজনা ছিল অনেক। ৭০ মিনিটের পর নেপালি দর্শকরা বাংলাদেশি বক্সে বোতল ছুড়ে মারেন। মাঠে দুই দলের ফুটবলারদের মধ্যেও উত্তেজনা দেখা গেছে।