রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটির পারমাণবিক প্রতিরোধ বাহিনীকে উচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন ঘিরে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর ‘আক্রমণাত্মক বিবৃতি’ এবং মস্কোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশের একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান পুতিন।
রোববার এক টেলিভিশন ভাষণে এই নির্দেশ দানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুতিন। তিনি বলেন, রুশ সেনাবাহিনীর পারমাণবিক অস্ত্রের দায়িত্বে থাকা দলকে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত থমাস গ্রিনফিল্ড বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন এই যুদ্ধকে এমনভাবে বাড়িয়ে চলেছেন যা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য এবং আমাদেরকে তার পদক্ষেপগুলো সম্ভাব্য শক্তিশালী উপায়ে আটকাতে হবে।
প্রতিবেশী ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া রাশিয়ার আগ্রাসনকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।
এই অভিযান শুরুর পর পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যরা ইউক্রেনে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ এবং মস্কোর বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়।
পশ্চিমাদের এসব আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়ার পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে পারমাণবিক প্রতিরোধ বাহিনীকে উচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিলেন পুতিন।
টেলিভিশন ভাষণে পুতিন বলেছেন, ‘আমাদের দেশের বিরুদ্ধে অবৈধ সব নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে সবাই খুব ভালোভাবে অবগত আছেন। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আমাদের দেশের বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো কেবল অর্থনৈতিক দিক থেকে বৈরীতাপূর্ণ ব্যবস্থাই নিচ্ছে না, বরং নেতৃস্থানীয় ন্যাটো দেশগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা আক্রমণাত্মক বিবৃতিও দিচ্ছেন।’
এদিকে, চলমান সংকটের সমাধানে ইতোমধ্যে রুশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশ নিতে বেলারুশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক সহযোগী এ তথ্য জানিয়েছেন। আলোচনায় সাড়া দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও।
রোববার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বেলারুশে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তবে পরে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে টেলিফোন আলাপে আলোচনায় সম্মতি জানান তিনি। এরপরই ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা বেলারুশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন বলে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের শীর্ষ সহযোগী ও রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের প্রধান ভ্লাদিমির মেডিনস্কি নিশ্চিত করেছেন।
ইউক্রেনের হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, রাশিয়ার আক্রমণের মুখে প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যাচ্ছে। বেসামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে রাশিয়ার গোলাবর্ষণ সত্ত্বেও রাজধানী কিয়েভ এখনো ইউক্রেন সরকারের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।