ঢাকা, রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পাল্টাপাল্টি হামলায় ১৬০ ফিলিস্তিনি ও ৪০ ইসরায়েলি নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : শনিবার ৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৪২:০০ অপরাহ্ন | আন্তর্জাতিক

হামাসের রকেট হামলার পাল্টা জবাবে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৬০ জন নিহত এবং এক হাজার আহত হয়েছে। ইসরায়েল এর আগে বলেছিল, তারা ফিলিস্তিনি বিদ্রোহীদের অভূতপূর্ব আক্রমণের অংশ ‘রকেটের ঢেউয়ের’ প্রতিক্রিয়া হিসেবে গাজা উপত্যকায় লক্ষ্যবস্তুতে হামলা শুরু করেছে।

 

স্থানীয় মেডিকেল সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

 

এর আগে, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হামলায় এ পর্যন্ত ইসরায়েলে মারা গেছেন অন্তত ৪০ জন। আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫০ জনে। ইসরায়েলি সরকার হতাহতের এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।

 

শনিবার (৭ অক্টোবর) ভোরে গাজা থেকে ইসরায়েলে কয়েক হাজার রকেট ছোড়ে হামাস। ২০ মিনিটে ইসরায়েলে পাঁচ হাজার রকেট ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটি। পাশাপাশি, ইসরায়েলের ভেতরে সশস্ত্র যোদ্ধারা ঢুকে পড়ারও খবর পাওয়া গেছে।

 

এমন অবস্থায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তার দেশ ‘যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে’। ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের দিক থেকে আকস্মিক আক্রমণ শুরুর পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এ বক্তব্য দিয়েছেন।

 

নেতানিয়াহু বলেন, ‘ইসরায়েলের জনগণ, আমরা যুদ্ধের মধ্যে রয়েছি। এতে আমরা জিতব।’

 

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় শত্রুদের এমন মূল্য দিতে হবে যে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই।

 

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনি প্রায় আড়াই হাজার রকেট ছুঁড়েছে ইসরায়েলে। এ ছাড়া সমুদ্র, স্থলপথ এবং প্যারাগ্লাইড করে অস্ত্রধারীরা ইসরায়েলে ঢুকে পড়েছে।

 

রকেট হামলার জবাবে ইসরায়েল হামাসের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের দাবি, তারা হামাসের ১৭টি সেনা কম্পাউন্ডে হামলা করেছে।

 

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স আইডিএফ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত ১৭টি সেনা কম্পাউন্ড আর হামাসের অপারেশনের চারটি হেডকোয়ার্টারে হামলা করেছে। তবে এই দাবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

 

এক বিবৃতিতে হামাস নেতা মোহাম্মেদ দেইফ বলেন, আমরা শনিবার ইসরাইলের উদ্দেশ্যে পাঁচ হাজার রকেট ছুড়েছি। এর মধ্য দিয়ে আমরা অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড শুরু করে দিয়েছি।

 

দেইফ বলেন, যথেষ্ট হয়েছে। ইসরায়েলকে আমরা উপযুক্ত জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশপ্রেমিক সব ফিলিস্তিনিকে এই যুদ্ধে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি।

 

অন্যদিকে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, দখলদার সেনা ও বসতি স্থাপনকারীরা যে আতঙ্ক তৈরি করেছে, সেখান থেকে ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকার রয়েছে নিজেদের রক্ষা করার।

 

হামাস দাবি করেছে, তারা অন্তত ৩৫ জন ইসরায়েলিকে বন্দি করেছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করেনি।

 

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, তাদের ওপর আক্রমণ করে হামাস ‘অনেক বড়’ ভুল করেছে। প্রতিটি জায়গায় ইসরায়েলি সেনারা তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ইসরায়েল রাষ্ট্র এতে জয়ী হবে।

 

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে, তারা এখন যুদ্ধাবস্থায় রয়েছে এবং কয়েক ডজন যুদ্ধ বিমান গাজায় হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে আকাশ পথে হামলা চালাতে যাচ্ছে।

 

গণমাধ্যমে হামাসের এক সিনিয়র সেনা কমান্ডার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই অপারেশন শুরুর ঘোষণা দেন, তিনি প্রত্যেক ফিলিস্তিনিকে সবখানে থেকে যুদ্ধে নামার আহবান জানান।

 

ইহুদীদের বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠান সুকত শেষ হওয়ার পরপরই শনিবার ভোর থেকে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা অঞ্চল থেকে রকেট হামলা শুরু হয়।