কবি লিখেছিলেন, ‘ফাল্গুনে বিকশিত কাঞ্চন ফুল, ডালে ডালে পুঞ্জিত আম্রমুকুল’। কবির ভাষায় ফাল্গুন এসেছে সুবাস ছড়াচ্ছে আম্রমুকুল।
গাছে গাছে ফুটেছে আমের মুকুল। প্রকৃতিতে এখনো ফাল্গুন ; কিন্তু এরই মধ্যে গাছে গাছে ফুটেছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এই মুকুলের ঘ্রাণ। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ।
আর এই মিষ্টি গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে শোনাচ্ছে মধুমাসের আগমনী বার্তা। গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন।
মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন যায়গায় দেখা যাচ্ছে,রাজার মাঠ, পার্বত্যজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাংলা, বান্দরবান জেলা প্রশাসক কার্যালয়, বান্দরবান পুলিশ সুপার কার্যালয়, সদর এসপি সার্কেল, এল জি ই ডি ভবন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী,বান্দরবান আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
,শহরে, পাহাড়ের পাদদেশে চিম্বুক, রোয়াংছড়ি, বাঘমারা, ডুলুপাড়া ও কানা পাড়াসহ সড়কে পাশে ও গ্রামের গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে আগাম আমের মুকুলের ঘ্রাণে মৌমাছির আহরণে কোকিলের ডাকে শুভা পাচ্ছে আমের মুকুল । শহর থেকে শুরু করে গ্রামের বসতবাড়ির আঙ্গিনার আম গাছগুলোতে সুন্দর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
থোকা থোকা মুকুলের ভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালাপালা। আমের মুকুলের ঘ্রাণ বইছে পুরো সবখানে। চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এই মুকুলের ঘ্রাণ। কোনো কোনো গাছে আমের মুকুল থেকে বেরিয়েছে ছোট ছোট আম গুটি। গাছে মুকুলের সঙ্গে গুটি আমের দেখাও মিলছে। । বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে এর সুগন্ধ। গ্রামগঞ্জ সর্বত্র আমগাছ তার মুকুল নিয়ে হলদে রং ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে আমাদের বান্দরবান । গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে খুশি এলাকার মানুষ।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, বান্দরবান জেলা জুড়ে অর্থ বছরে ১৫.৭৫ হেক্টর জমিতে ফলন হয়েছে। বিভিন্ন জাতের আম উৎপাদন হবে । কিন্তু চলতি বছর আমের অবাদি-অনবাদি জমিতে কতটুকু ফলন হয়েছে তা জরিপ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন কৃষিবিভাগ।
আরেক চাষি লালকিম বম বলেন, পাঁচ একর জায়গা জুড়ে প্রায় ৬-৭ হাজার বিভিন্ন জাতের আম চারা রোপন করেছি। তবে দেশী জাতের আম গাছে মুকুল ধরতে শুরু করেছে। কিন্তু রাংগোয়েই জাতের কিছু কিছু গাছের আম খাওয়ার উপযোগী হয়েছে। এখনও পর্যন্ত শিলাবৃষ্টি আর কালবৈশাখী ঝড় হয়নি। আমের মুকুল ভরা মৌসুমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মতো কোন কিছু হলেই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানান বাগান মালিকরা।
বান্দরবান জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃরফিকুল ইসলাম বলেন, আমের প্রকৃত ফলন পেতে হলে অবশ্যই আম গাছে কমপক্ষে দুইবার ইমিডাক্লোরোপিড গ্রুপের কীটনাশক ও ম্যানকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করতে হবে। প্রথমবার আমের মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগে, দ্বিতীয়বার আমের সাইজ মটরদানার মত হলে। এ ব্যাপারে কৃষকদের পরামর্শ পাশাপাশি প্রশিক্ষণ প্রদান কৃষি বিভাগ পক্ষ হতে অব্যাহত রেখেছে।